বাড়িটির সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুরের পরের অবস্থা। গত শনিবার তোলা
বাড়িটির সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুরের পরের অবস্থা। গত শনিবার তোলা

রাজশাহী নগরে কল্পনা রায় ভৌমিকের বাড়ির প্রাচীর ভাঙচুর

রাজশাহী নগরে শিক্ষক ও নারী অধিকারকর্মী কল্পনা রায় ভৌমিকের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙচুরের পর জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গত শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নগরের মতিহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন কল্পনা রায় ভৌমিক। এতে তিনি অভিযোগ করেন, বাড়িটি দখলের উদ্দেশ্যে প্রাচীর ভাঙচুর করা হয়েছে।

কল্পনা রায় ভৌমিক রাজশাহী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ৩২ বছর দায়িত্বপালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি রাজশাহী মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক প্রয়াত কানাই লাল রায়ের স্ত্রী এবং বিশিষ্ট নাট্যকার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মলয় ভৌমিকের বড় বোন।

এ ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন জানিয়ে কল্পনা রায় বলেন, নগরের ধরমপুর এলাকার মোখলেসুর (৩০) নামের এক ব্যক্তি এই সম্পত্তি নিজের বলে দাবি করেন। তাঁর দাবি অনুযায়ী শনিবার স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর (সদ্য সাবেক) আশরাফুল হাসান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বাড়ির জমি মাপেন। তবে মীমাংসা হওয়ার আগেই মোখলেস বাড়িটির উত্তর পাশের প্রাচীর ভেঙে দেন। সেই সঙ্গে জমিটি জোরপূর্বক দখল করার ঘোষণা দিয়ে যান।

বাড়িটির মূল মালিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রয়াত অধ্যাপক প্রীতি কুমার মিত্র। তাঁর উত্তরাধিকার যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ছেলে প্রদীপ্ত কুমার মিত্র। প্রায় ২০ বছর আগে নির্মিত বাড়িটির জমি আরও আগে কেনা হয়েছিল মোখলেসুরের বাবা দানেশ উদ্দিন সরকারের কাছ থেকে। ওই সময় নির্মিত বাড়িটিতে মোট ছয়টি ফ্ল্যাট আছে। ২০০৭ সালে ক্রয়সূত্রে তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটের মালিক হন কল্পনা রায় ভৌমিক। ২০১১ সালে পাশের আরও একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দুটো মিলিয়ে বসবাস করে আসছেন।

বাড়িটি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এর সদ্য সাবেক কাউন্সিলর মো. আশরাফুল হাসান বলেন, ‘জমির কাগজপত্র সবই ঠিক আছে। মোখলেসুরের বাবা দানেশ উদ্দিনের কাছ থেকে অনেক আগে এই জমি ক্রয় করা হয়। এখন মোখলেস মনে করছেন, যে পরিমাণ জমি তাঁর বাবা বিক্রি করেছেন, তার চেয়ে বেশি জমি এই প্লটে আছে। তবে মাপজোখ করে তাঁর মনে হয়েছে, বাড়ির মধ্যে তাঁদের অতিরিক্ত জমি নেই। জমি বেশি থাকলে হয়তো রাস্তার মধ্যে চলে গেছে। রাস্তাও আগের চেয়ে অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে মোখলেসের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম স্বীকার করেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়নি। এখন কোনো অভিযোগ পেলে সেনাবাহিনীকে জানাতে হয়। যৌথভাবে কাজ করতে হয়।