সরাইলে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ

সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে বাস কাউন্টারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার চিত্র
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে ঢাকাগামী কোনো যাত্রীবাহী বাস আজ শনিবার ছেড়ে যায়নি। গতকাল শুক্রবার সারা দিনে ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের এই মোড় হয়ে যাত্রীশূন্য কয়েকটি বাস ছেড়ে গেলেও আজ শনিবার ভোর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একটি বাসও ছেড়ে যায়নি। ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

আজ সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সময়ে বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ঢাকামুখী কোনো বাস, যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত কোনো যানবাহন ছেড়ে যাচ্ছে না। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস ও যাত্রীবাহী অন্যান্য যানবাহন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। জেলার অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলাচল করছে কম। এই সুযোগে মহাসড়কে নিষিদ্ধঘোষিত সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা যাত্রী নিয়ে অবাধে চলাচল করছে। সাধারণত মহাসড়কে তিন চাকার কোনো যান চলাচল করলে হাইওয়ে পুলিশ তা আটক করে মামলা দিয়ে থাকে। তবে গতকাল থেকে হাইওয়ে পুলিশ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশে চলাচলকারী কোনো তিন চাকার যানবাহন আটক করেনি। মামলাও দেয়নি।

জরুরি প্রয়োজনে যাঁরা ঢাকা বা ঢাকা হয়ে অন্যান্য জেলা যেতে চেয়েছেন, তাঁদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ফিরে যেতে হয়েছে।

সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে ঢাকাগামী বাস কাউন্টার রয়েছে ১৬টি। আজ একটি কাউন্টারও খোলেনি। ঢাকাগামী বাস বা অন্য কোনো যানবাহন না পেয়ে জরুরি প্রয়োজনে যাঁরা ঢাকা বা ঢাকা হয়ে অন্যান্য জেলা যেতে চেয়েছেন, তাঁদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ফিরে যেতে হয়েছে। ময়মনসিংহ বা সিলেটগামী লোকজনকেও বিপাকে পড়তে হয়েছে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামীমুল হক (৩৫) নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক আগে বিশ্বরোড মোড়ে এসেছি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যাব ঘাটাইল। কিন্তু কোনো বাস বা অন্য কোনো যানবাহনও পাচ্ছি না। এখন বিপদে পড়েছি।’

বেলা ১১টার দিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেনা সদস্য বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটায় এখানে এসেছি। ঢাকা হয়ে আজই যশোরে যাওয়ার কথা, কিন্তু কোনো উপায় পাচ্ছি না। বিষয়টি আমার ইউনিটকে অবহিত করেছি। এখনো কোনো উত্তর পাইনি।’

সিলেট-ময়মনসিংহের বাস কাউন্টার পরিচালনা করেন রওশন আলী (৫৫)। দুপুর ১২টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সিলেট থেকে একটি বাসও ছেড়ে আসেনি। কিছু যাত্রী আইছিল অনেকক্ষণ বসে চলে গেছে।’ আলম মিয়া (৩০) নামের এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, ‘আজ হরতাল, তাই বাস নাই।’

সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুখেন্দু বসু প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত দুই দিনে আমরা কোনো যানবাহন আটক করিনি, মামলাও দেইনি। আমরা মহাসড়কে চলাচলকারী কোনো যানবাহনে তল্লাশিও করেনি। কী কারণে বাস চলাচল করছে না আমরা বলতে পারব না।’