কম্বল পেয়ে খুশি শীতার্ত মানুষ। গতকাল দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধামাহার এলাকায়
কম্বল পেয়ে খুশি শীতার্ত মানুষ। গতকাল দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধামাহার এলাকায়

‘কম্বলটা পাই খুব উপকার হইল’

৭০ বছর বয়সী হবিবুর রহমানের শরীর বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে। চোখেও ঠিকমতো দেখতে পান না। নাতিকে সঙ্গে করে গতকাল শুক্রবার বিকেলে তিনি এসেছিলেন দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ধামাহার গ্রামের খানকা মাঠে। শীতে কাঁপতে কাঁপতে হবিবুর বলেন, ‘বয়স হয়ে গেছে, কাজকর্ম করতে পারি না। ছেলের সংসারে আছি। ছেলের আয়রোজগারও কম। কোনোমতে চলতেছি। ঠান্ডার কাপড় কিনার টাকা কই। একজন একটা স্লিপ দিয়ে বলল, এইটা দেখালি কম্বল দিবে। খুব উপকার হলো কম্বলটা পেয়ে।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও বন্ধুসভার সদস্যদের সহযোগিতায় গতকাল ধামাহার গ্রামে হবিবুর রহমানের মতো আড়াই শ অসহায় ও শীতার্ত নারী-পুরুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। শীতের কষ্টের মধ্যে কম্বল উপহার পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তাঁরা।

এর আগে বন্ধুসভার সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার বিজোড়া ইউনিয়নের ধামাহার, চৌমুহনী ও বহলা এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায় মানুষের তালিকা তৈরি করে তাঁদের হাতে স্লিপ তুলে দেন। সেই স্লিপ নিয়ে গতকাল ধামাহার খানকা মাঠে উপস্থিত হন তাঁরা। বন্ধুসভার সদস্যরা তাঁদের সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড় করিয়ে প্রত্যেকের হাতে একটি করে কম্বল তুলে দেন।

ধামাহার গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চনী বেগম (৭০) বললেন, ‘কম্বল কিনিবু বা, টাকা কোঠে পাবু। শীত আসিলি হামার কষ্ট শুরু হই যাছে। এইবার তোমরা প্রথমে হামাক কম্বল দিবার আসিলেন। এই কম্বলটা পাই খুব উপকার হইল বাপু।’

কম্বল পেয়ে খুশি ৬৫ বছর বয়সী ধামাহার গ্রামের আছিয়া খাতুন। লাঠিতে ভর করে মাঠে এসেছেন তিনি। কম্বল হাতে নিয়ে বলেন, ‘কয় দিন থাকি শীত পড়ির ধরিছে। হাত–পা কোঁকড়া নাগি যাছে। শেষ রাইতত ঠান্ডা বেশি নাগোছে। খুব ভালো হইল তোমরা এই সময়তে একটা কম্বল দিলেন।’

কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর জেলা কালচারাল অফিসার মীন-আরা পারভীন, আইনজীবী তাপস পাল, স্থানীয় বাসিন্দা এরশাদুজ্জামান মোল্লা, প্রথম আলোর দিনাজপুর প্রতিনিধি রাজিউল ইসলাম প্রমুখ।

মীন-আরা পারভীন বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা একটু বেশি। প্রথম আলো প্রতিবছর অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। একেবারে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের খোঁজ রাখছে। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে সবার হাতে কম্বলগুলো বিতরণ করা হলো। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।’

বন্ধুসভার সদস্যদের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুব্রত সরকার, শবনম মুস্তারি, বীথি রায়, সুমাইয়া আক্তার, ব্রততী বিশ্বাস, বিরোশ রায়, বেলালুর রহমান, সাব্বির রহমান প্রমুখ।

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে। হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল, হিসাব নম্বর: ২০৭২০০১১১৯৪, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৫৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। এ ছাড়া বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।