বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে, সঙ্গে নদীর পানির উচ্চতাও বাড়তে শুরু করেছে। ঝড়ের কবল থেকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম নৌকা রক্ষায় ব্যস্ত সময় পার করছেন শাহাদাৎ-ফরিদা দম্পতি।
শাহাদাৎ গাজী ও ফরিদা বেগম দম্পতি শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ভামিয়া এলাকার খোলপেটুয়া নদীর তীরে বসবাস করেন। আজ বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে স্বামী-স্ত্রী মিলে বেড়িবাঁধের পাশে কাত করে বেঁধে রাখছেন। মৎস্যজীবী শাহাদাৎ গাজী বলেন, ‘ঝড় আসছে শুনেছি। তাই নৌকাটি যাতে ঝড়ে ভেসে না যায়, সে জন্য ডাঙায় বেঁধে রাখছি।’
একই এলাকার রাসেদ গাজী বলেন, ‘ঝড়ের কথা শুনে এলাকার জেলেরা আতঙ্কিত। সবাই ব্যস্ত নৌকা বাঁচাতে। এলাকার মানুষের একমাত্র বাঁচার অবলম্বন নৌকা। নৌকায় তাঁদের জীবন বাঁধা।’
শুধু শাহাদাৎ-ফরিদা দম্পতি নয়, উপকূলীয় অঞ্চলের নদীতীরবর্তী বুড়িগোয়ালিনী, কৈখালী, গাবুরা, পদ্মপুকুরসহ অন্য এলাকার মৎস্যজীবীরা বিপদ এড়ানোর জন্য তাঁদের নৌকা ডাঙায় তুলে রাখছেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে দেশের উপকূলীয় ১৪ জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আজ দুপুরে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ মধ্যরাতে ভারতের ওডিশা রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। আর এর প্রভাবেই বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোয় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির সামনের অংশের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এসব এলাকার কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।