ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সংস্কারকাজে ধীরগতি, দুর্ভোগ 

ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুর পর্যন্ত মহাসড়কটির ৪৯ কিলোমিটার মহাসড়কের সংস্কারকাজ চলছে। 

সংস্কারকাজ চলায় ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়ক বেহাল। গত বৃহস্পতিবার মুক্তাগাছা উপজেলার মনতলা এলাকায়

ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ময়মনসিংহ জেলার অংশের ৩৪ কিলোমিটার অংশে চলছে সংস্কারকাজ। সংস্কার চলায় মহাসড়কটি বর্তমানে বেহাল হয়ে পড়েছে। এতে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের চালক ও যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েছেন। 

ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুর পর্যন্ত মহাসড়কটির মোট ৪৯ কিলোমিটার মহাসড়কের সংস্কারকাজ চলছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় পড়েছে ৩৪ কিলোমিটার। ওই মহাসড়কে নিয়মিত চলাচল করা যাত্রী ও বিভিন্ন যানবাহনের চালকের সঙ্গে সরেজমিনে কথা বলে জানা যায়, দুই বছরের বেশি সময় ধরে মহাসড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে মহাসড়কের বিভিন্ন বাজার এলাকায় আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। যে কারণে বাজারগুলো চলাচলের উপযোগী হলেও মহাসড়কের বাকি অংশে বিভিন্ন স্থানে বর্ষার কারণে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই সব গর্তে কাদা ও পানি জমে থাকে। এতে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রহমতপুর বাইপাস এলাকায় চলছে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ। এতে ওই এলাকায় সৃষ্টি হয় যানজট।

গত মঙ্গলবার মহাসড়কের ময়মনসিংহ সদর থেকে মুক্তাগাছা উপজেলার নতুনবাজার পর্যন্ত অংশ সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন অংশে মহাসড়কের দুই পাশে পানি জমে রয়েছে। কোথাও কোথাও মহাসড়কের মাঝখানে কাদা। তবে মঙ্গলবার সরেজমিনে ময়মনসিংহ সদর থেকে মুক্তাগাছার নতুনবাজার পর্যন্ত অংশে কোথাও সংস্কারকাজ চলতে দেখা যায়নি। 

সত্রাশিয়া বাজার এলাকায় কথা হয় মুক্তাগাছার বাসিন্দা তরুণ ইজিবাইকচালক নাজমুল হকের সঙ্গে। নাজমুল হক বলেন, মহাসড়কের মুক্তাগাছার সত্রাশিয়া বাজার এলাকায় কয়েক দিন আগেও বড় বড় খানাখন্দ ছিল। যে কারণে অনেক চালকই ইজিবাইক চালানো বন্ধ রাখেন। তবে গত রোববার ওই সব খানাখন্দ সওজের পক্ষ থেকে সংস্কার করায় কিছুটা চলাচলের উপযোগী হয়েছে। 

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ময়মনসিংহ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহ নগরের জিরো পয়েন্ট থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুর পর্যন্ত ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কটির সংস্কার ও প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১ জুলাই। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের ৩০ জুন। ইতিমধ্যে সংস্কারের কাজের দুই বছর পার হয়ে গেছে। এ সময়ে ৪০ শতাংশ কাজ হয়েছে। 

মহাসড়কটির প্রস্থ ছিল মাত্র ৫ দশমিক ২ মিটার। সংস্কারের পর প্রস্থ বেড়ে ১০ দশমিক ৩ মিটার হবে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণ করে দুই পাশে মাটি ভরাট করা হয়েছে। ৪৯ কিলোমিটার অংশের সংস্কার ব্যয় ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। তবে এর মধ্যে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হয়েছে। ৪৯ কিলোমিটার অংশে মুক্তাগাছা উপজেলার মনতলা বাজারে সুতিয়া নদীর ওপর একটি সেতু ও বিভিন্ন অংশে মোট ২৯টি কালভার্ট করা হয়েছে। 

সওজের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘দুই বছরের বেশি সময়ে ৪০ শতাংশ কাজ হলেও এ কাজ হয়েছে মাটির নিচের অংশের কাজ। মাটির নিচের অংশের কাজের জন্য সময় বেশি ব্যয় হয়। বাকি কাজ দ্রুত করা যায়। আশা করি নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ হবে। বর্ষাকাল হওয়ায় কাজ সাময়িক বন্ধ থাকলেও কয়েক দিন আগে আবার কাজ শুরু করা হয়েছে।’