কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আজ সোমবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবরোধ। এ সময় প্রতীকী আত্মহত্যা করেন এক শিক্ষার্থী
ছবি: প্রথম আলো

কোটা বাতিলের দাবিতে আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ওই মহাসড়কের কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ী এলাকায় অবরোধ করেন তাঁরা। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে অন্তত ১০ কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

শিক্ষার্থীদের আজকের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে অংশ নিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ, জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সাদা কাপড় গায়ে জড়িয়ে গাছে ঝুলে থাকার আত্মহত্যার ভঙ্গি করে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর সাদা কাফনের কাপড়ে ‘মেধা থাকার পরও কোটাপদ্ধতি আমাকে বাঁচতে দেয়নি’, ‘তোর ছেলেকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে মা’ লেখা রয়েছে।

এ সময় উপস্থিত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষ্যমের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ কাউসার বলেন, ‘আমরা সব জায়গা থেকে অযৌক্তিক কোটাপদ্ধতির বাতিল চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল মালেক বলেন, ‘কোটাপদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আমরা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছি। বৈষম্যমূলক কোটাপদ্ধতি বাতিল করতে হবে। এটাই আমাদের একমাত্র দাবি। বৈষম্যমূলক কোটাপদ্ধতি বাতিল করে মেধাবীদের মুক্তি দেন। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্দোলন সমন্বয়কদের অন্যতম মোহাম্মদ সাকিব হোসাইন বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বয় করে আজ তৃতীয় দিনের মতো আমাদের কুমিল্লার কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল ও কোটাপদ্ধতি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।’

আন্দোলন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করেন। এদিকে আন্দোলনকারীদের জন্য যানবাহন থেমে গিয়ে মহাসড়কের দুই পাশে অন্তত ১০ কিলোমিটারজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

অবরোধস্থলে আছেন সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর ভুইয়া। তিনি জানান, তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা অবরোধস্থলে আছেন। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, সে জন্য সতর্ক রয়েছেন পুলিশ সদস্যরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম জানান, অবরোধস্থলে আছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আন্দোলন পরিস্থিতি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, এর আগে কোটাপ্রথা বাতিলের দাবিতে ৪ ও ৭ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যথাক্রমে তিন ও চার ঘণ্টা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।