আতিথেয়তায় মুগ্ধ ভূপর্যটক অক্ষয় ভগত, আবার আসতে চান বাংলাদেশে

ঢাকায় শহীদ মিনারে ভূপর্যটক অক্ষয় ভগত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মানুষের আতিথেয়তায় মুগ্ধ ভারতীয় ভূপর্যটক অক্ষয় ভগত (২৫)। মুগ্ধতার সেই স্মৃতি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে যাচ্ছেন তিনি। পরিবেশ রক্ষা ও নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর পৃথিবী গড়তে গাছ লাগানোর বার্তা নিয়ে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি।

অক্ষয় ভগত সর্বোচ্চ সাইকেল চালিয়ে ভ্রমণ করায় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন। এ ছাড়া সাইকেল চালিয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ মহাসড়ক ভারতের উম লিং লা পাসে উঠে রেকর্ড গড়েছেন তিনি।

গতকাল বুধবার রাতে অক্ষয় ভগতের সঙ্গে কথা হয়। তিনি এ সময় অবস্থান করছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের ভাটারপাড়া গ্রামে। এ গ্রামের বাসিন্দা বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের জেলা কমিটির সভাপতি সুশীল কুমার মাহাতোর বাড়ির অতিথি হয়ে এসেছিলেন তিনি।

অক্ষয় ভগতের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি থানার বুড়দা গ্রামে। অবিবাহিত অক্ষয় ভগতের বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পাশাপাশি তিনি কৃষিকাজের সঙ্গেও যুক্ত। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে সাইকেলে ঘোরা তাঁর নেশা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উদ্দেশ্য পাল্টে যায় তাঁর। সাইকেলে বিশ্বভ্রমণের পাশাপাশি মানুষের মঙ্গলের জন্য বিভিন্ন বার্তা দিতে থাকেন তিনি। ২০১৮ সালের ৫ মার্চ নিজের দেশ ঘুরে বেড়াতে শুরু করেন তিনি। ১ বছর ১ মাস ৬ দিনে অক্ষয় ভগত পুরো দেশ সফর করেন। সর্বোচ্চ সাইকেল চালিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তাঁর নাম লেখান। এরপর তিনি আফ্রিকার চারটি দেশ ভ্রমণ করেন সাইকেলে।

অক্ষয় ভগত ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর তিনি সাইকেল নিয়ে বিভিন্ন জেলা পরিভ্রমণ করেন। ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত হন তিনি। ভাষার প্রতি এ দেশের মানুষের মমত্ববোধ দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
অক্ষয় ভগত বাংলাদেশের রাজধানীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ভ্রমণ শেষে গতকাল বুধবার ভোরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী–অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় আসেন। এখানকার প্রকৃতি ও মানুষের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘অতিথিপরায়ণ মানুষগুলোর ভালোবাসার স্মৃতি নিয়ে বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে যাচ্ছি। ইচ্ছা রইল আবারও এ দেশে আসার।’

রায়গঞ্জ উপজেলার নিমগাছি ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জীব কুমার মাহাতো বলেন, অল্প সময়ে অক্ষয় ভগত আন্তরিকভাবে মিশে গিয়েছিলেন। তাঁকে অতিথি হিসেবে পেয়ে এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আনন্দ প্রকাশ করেছেন।