মধ্যনগর উপজেলার গুরমার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ২৬ নম্বর প্রকল্প কাজ চলছে। সম্প্রতি তোলা
মধ্যনগর উপজেলার গুরমার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ২৬ নম্বর প্রকল্প কাজ চলছে। সম্প্রতি তোলা

মধ্যনগরে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে গাফিলতি, তিনজনকে শোকজ

সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি ও গাফিলতির অভিযোগে তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের চিঠি পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভাপতি অতীশ দর্শী চাকমা স্বাক্ষরিত নোটিশ আজ শুক্রবার তাঁদের কাছে পাঠানো হয়। নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন ঘোড়াডোবা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ৬ নম্বর পিআইসির সভাপতি দিলীপ রায়, ৭ নম্বর পিআইসির সভাপতি বিশ্বজিত রায় ও গুরমা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ২৩ নম্বর পিআইসির সভাপতি সাব্বির আলম।

ইউএনও অতীশ দর্শী চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে ধীরগতি ও গাফিলতির কারণে দুটি হাওরের তিনটি পিআইসির সভাপতিদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যতায় বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মধ্যনগর উপজেলার ঘোড়াডোবা হাওরে ৭টি, গুরমা হাওরে ১২টি, রুই বিল হাওরে ৪টি ও কাইলানী হাওরে ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) আছে। চারটি হাওরের ৩২টি প্রকল্প কাজের বিপরীতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর ঘোড়াডোবা হাওরের একটি ফসল রক্ষা বাঁধে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি ফেলে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের উদ্বোধন করা হয়। ১৯ ডিসেম্বর উপজেলায় পিআইসি গঠন শেষ হয় এবং ওই দিনই ৩২টি পিআইসিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

নীতিমালা অনুয়ায়ী, গত বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন, প্রকল্প স্থান নির্ধারণ, জরিপসহ যাবতীয় কাজ শেষ করার কথা ছিল। ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে তা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ১৯ ডিসেম্বর কার্যাদেশ দেওয়া হলেও ঘোড়াডোবা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ৬ ও ৭ নম্বর প্রকল্পে এখনো কাজ শুরু হয়নি। এ ছাড়া গুরমা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ২৩ নম্বর প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। খবর পেয়ে গতকাল দুপুরে ইউএনও সরেজমিন পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পান। পরে তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়।

ঘোড়াডোবা হাওরের ৬ নম্বর পিআইসির সভাপতি দিলীপ রায় ও ৭ নম্বর পিআইসির সভাপতি বিশ্বজিত রায় বলেন, তাঁরা কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন। যে জায়গা থেকে মাটি তুলে বাঁধের কাজ করা হবে, সেখানে পানি সরতে দেরি হওয়ায় কাজ যথাসময়ে শুরু করা যায়নি। এখন পানি সরেছে। আগামীকাল থেকে তাঁরা কাজ শুরু করবেন।

গুরমা হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের ২৩ নম্বর পিআইসির সভাপতি সাব্বির আলম বলেন, যান্ত্রিক সমস্যায় বাঁধের কাজে ধীরগতি ছিল। এখন সমস্যার সমাধান হয়েছে।