দুর্বৃত্তরা আজ দেশে শক্তিমান: রফিউর রাব্বি
নারায়ণগঞ্জের মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি অভিযোগ করেছেন, দেশে দুর্বৃত্তরা আজ শক্তিমান। ত্বকীর চিহ্নিত ঘাতকেরা প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রতিদিন প্রশাসনের মদদে ‘হোন্ডা’ মিছিল নিয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। এই শহর খুনি–জল্লাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১২৯ মাস উপলক্ষে মোমশিখা প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে তিনি এই অভিযোগ করেন।
ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ মোমশিখা প্রজ্বালনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। রফিউর রাব্বি বলেন, দুর্বৃত্তরা আজ দেশে সর্বশক্তিমান। কর্তৃত্ববাদী শাসন দেশকে আজ এক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরলেও ত্বকীর চিহ্নিত খুনিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন রফিউর রাব্বি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রশাসনের মদদে ত্বকীর চিহ্নিত খুনি আজমেরী ওসমান খুনি-সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রতিদিন হোন্ডা-মিছিল করে শহরে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছে। এই শহর খুনি-জল্লাদদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ত্বকী হত্যার বিচার না করায় সরকারের ভূমিকারও সমালোচনা করেন রফিউর রাব্বি। তিনি বলেন, ত্বকীসহ সাগর-রুনি, তনু ও নারায়ণগঞ্জের আশিক, চঞ্চল, বুলু, মিঠু সব হত্যার বিচার মানুষ ভবিষ্যতে আদায় করবে।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরের শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন ত্বকী। দুদিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজও পেশ করা হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় মোমশিখা প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন শিশু সংগঠক রথীন চক্রবর্তী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, ন্যাপ নারায়ণগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুর সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি প্রদীপ ঘোষ ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।
সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘শামীম ওসমানের নির্দেশে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে বলেই ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ হয়ে আছে।’