একদিকে ক্রেতার নাভিশ্বাস বাজারদর নিয়ে, অন্যদিকে প্রান্তিক কৃষক হতাশ ন্যায্যমূল্য না পেয়ে। ভোক্তা আর উৎপাদকের এই দুর্দশার জন্য সিন্ডিকেট, মধ্যস্বত্বভোগী, চাঁদাবাজিসহ নানা বিষয় আলোচনায় আসে। কিন্তু উত্তরণ হয় না পরিস্থিতির। এমন প্রেক্ষাপটে পূর্ণাঙ্গ বাজার ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির এক মডেল তুলে ধরেছেন মোংলা বন্দরের এক কর্মকর্তা। এর মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত নিত্যপণ্যের মূল্য নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন সম্ভব বলে দাবি ওই কর্মকর্তার।
রোববার মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) যুগ্ম সচিব কাজী আবেদ হোসেন বন্দর সভাকক্ষে ওই ‘দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ মডেল’ তুলে ধরেন। কাজী আবেদ হোসেনের এই মডেল এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। সেখান থেকে গত ১৫ অক্টোবর তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
দেশব্যাপী এই মডেলের বাস্তবায়ন করা গেলে সরকারের জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সহজ ও ফলপ্রসূ হবে বলে আশাবাদ আবেদ হোসেনের। আবেদ হোসেনের দাবি, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে তিনটি কমিটি গঠন করতে হবে। গ্রামীণ হাট থেকে জেলা বা বিভাগীয় শহরের প্রতিটি বাজারে বোর্ডের বাজারদর তুলে ধরতে হবে। আর বাজারদর নির্ধারণ করা হবে উৎপাদক বা কৃষক পর্যায়ের দামের ওপর। কোনো বিক্রেতা ওই দামের অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবে না। এটা বাস্তবায়ন করা গেলে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা তাঁর। এ ছাড়া সাধারণ সময়ের পাশাপাশি অতিবৃষ্টি, বন্যাসহ দুর্যোগের সময়ের জন্যও আকস্মিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে করণীয় তুলে ধরা হয়।
কাজী আবেদ বলেন, এই রূপরেখা বাস্তবায়ন হলে ৬৪ জেলা, বিভাগীয় শহর, উপজেলা ও গ্রামীণ হাট পর্যায়ে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত হবে। নিত্যপণ্যের মূল্য কমাতে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমানোর ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে মডেলে। সেখানে কৃষকের জন্য ডিজেলসহ প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্য হ্রাস এবং হিমাগার, নিত্যপণ্য পরিবহন ও অন্যান্য বিষয়ে নজরদারির বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি মডেলটি আরও গ্রহণযোগ্য বা তথ্যভিত্তিক করতে একটি গবেষণা কমিটি করার প্রস্তাব রাখা হয়।