বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ও হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’–এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মানববন্ধনে জাহাঙ্গীরনগর সংস্কার আন্দোলন ও ইসলামী ছাত্রশিবির সংহতি জানায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নজরুল ইসলাম মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন।
মানববন্ধনে ছাত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের বিচারের জন্য আজকে আমাদের কেন রাজপথে দাঁড়াতে হবে? প্রশাসনের উচিত ছিল নিজ থেকে বিচার নিশ্চিত করা। প্রশাসন যদি সন্ত্রাসীদের বিচার না করে দেশ চালাতে চায়, তাহলে কখনোই তা পারবে না। তারা আনসার লীগ, পুলিশ লীগসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লীগ হিসেবে আবির্ভূত হবে বাংলাদেশে।’
হারুনুর রশিদ আরও বলেন, গত ১৫ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর যে ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়, সেখানে অসংখ্য শিক্ষার্থীর শহীদ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। অথচ সেই সন্ত্রাসীরা আজ ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ান। তাঁরা তাঁদের পরীক্ষা শেষ করে সনদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল, ক্ষমতায় আসার পরই তাঁদের চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার নিশ্চিত করা।
গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের চার মাস পরও আজকে আমাদের জুলাই-বিপ্লবে হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিতের জন্য দাঁড়াতে হচ্ছে। আমার ভাই, বন্ধু, শিক্ষকেরা শরীরে স্প্লিন্টার নিয়ে হাসপাতালে শুয়েছেন, আমার সহযোদ্ধাদের অঙ্গহানি হয়েছে, শহীদ পরিবারের দুঃখ ভারাক্রান্তের কথা শুনলে এখনো আমরা আমাদের অশ্রু নিবারণ করতে পারি না। গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষক প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে মাসে মাসে টাকা নিচ্ছেন, তাঁদের লজ্জা করা উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিপ্লবী বন্ধুরা হাসপাতালে শুয়ে আছেন, আর আপনারা বসে বসে শিক্ষক রাজনীতির সমীকরণ মেলাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, যদি আগামী সাত দিনের মধ্যে আপনারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা না করেন, তাহলে সাত দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। আগে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হবে, তাঁদের বিচার হবে তারপর একাডেমিক কার্যক্রম চলবে।’