ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক

‘নতুন সরকারকে বিব্রত করতে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে’

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সোমবার ঝালকাঠি শহরের বড়বাজার ও কাঠপট্টি এলাকায় চাল, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের কয়েকটি দোকান তদারক করেন
ছবি: প্রথম আলো

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, উত্তরাঞ্চলের একটি অসাধু মিলমালিক চক্র ডিসেম্বরের পর হঠাৎ করে চালের দাম বাড়িয়েছে। মিলমালিকেরা বলতে চাইছেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা এটি করেছেন। তবে ধানের দাম বাড়লেও সেই ধানের চাল বাজারে আসার কথা বৈশাখ মাসে। নতুন সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতেই অযৌক্তিকভাবে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে।

সোমবার সকালে ঝালকাঠিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিজেই। তিনি শহরের বড়বাজার ও কাঠপট্টি এলাকায় চাল, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের কয়েকটি দোকান তদারক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম, পুলিশ সুপার আফরুজুল হকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সফিকুজ্জামান বলেন, রোজায় সাধারণত কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এ জন্য চাল, ডাল, তেল, ছোলা, চিনি, খেজুরের পর্যাপ্ত মজুত রাখা হয়েছে। এসব পণ্য যাতে কেউ মজুত করতে না পারেন, এ ব্যাপারে তাঁরা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ জন্য অভিযানের ধরন পরিবর্তন করা হয়েছে। তাঁরা খুচরা বাজার থেকে তথ্য নিয়ে মূল জায়গায় ব্যবস্থা নিতে চান।

দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এ সময় বক্তারা বলেন, বরিশালের দ্রব্যমূল্যের তুলনায় ঝালকাঠিতে বেশি দাম। বরিশালে ১ কেজি শিম ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও ঝালকাঠিতে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। ফলে অনেকে বরিশাল থেকে বাজার করেন।

গরুর মাংস বেশি দামের কারণ জানতে চাইলে শহরের পূর্ব চাঁদকাঠির মাংস বিক্রেতা মো. শহিদ বলেন, ক্রেতারা হাড়-চর্বি নিতে চান না। শুধু মাংস দেওয়ায় অন্য স্থানের চেয়ে বেশি দাম নেওয়া হয়। এ সময় মহাপরিচালক ওই বিক্রেতার কাছে জানতে চান, ‘আপনি বুকে হাত দিয়ে বলেন, মাংসের সঙ্গে হাড়-চর্বি বিক্রি করেন না?’ তখন মাংস বিক্রেতা নিশ্চুপ থাকলে তাঁর দোকান বন্ধের নির্দেশনা দেন মহাপরিচালক।

সফিকুজ্জামান বলেন, দেশে প্রচুর চাল মজুত আছে। কোনোভাবেই চালের বাজার অস্থিতিশীল করা যাবে না। অতিরিক্ত মজুত করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি রোজায় কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পণ্যের মূল্য বাড়ালেও কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।