চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের আসনে বসা নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে শাখা ছাত্রলীগের দুই উপপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় চট্টগ্রাম নগর থেকে ক্যাম্পাসমুখী শাটল ট্রেনে সিটে বসা নিয়ে তর্কাতর্কিতে জড়ান শাখা ছাত্রলীগের ভার্সিটি এক্সপ্রেস ও সিক্সটি নাইনের দ্বিতীয় বর্ষের চারজন কর্মী। এর জের ধরে এক দফায় ট্রেনের মধ্যেই হাতাহাতি হয় তাঁদের। পরে ট্রেনটি সাড়ে নয়টার দিকে ক্যাম্পাসে পৌঁছালে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহজালাল হলে থাকা নেতা–কর্মীদের বিষয়টি জানান। আর ভার্সিটি এক্সপ্রেসের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হলে থাকা নেতা–কর্মীদের বিষয়টি জানান। পরে এই দুই উপপক্ষের নেতা–কর্মীরা হল থেকে লাঠিসোঁটা, রামদা ও ইটপাটকেল নিয়ে বের হন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া চলার পর পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে আহত কর্মীরা হলেন সিক্সটি নাইন উপপক্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মোহাম্মদ মামুন ও হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মো. মানিক এবং ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শাহ পরান। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে শাহ পরান গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় তাঁরা তিনজনকে চিকিৎসা দিয়েছেন। এর মধ্যে একজনকে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কুপিয়ে জখম করার চিহ্ন ছিল। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতা–কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ও আরেকটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। এ দুই পক্ষের মধ্যে আবার ১১টি উপপক্ষ রয়েছে। বিবদমান সিক্সটি নাইন ও ভার্সিটি এক্সপ্রেস উভয়ই নাছিরের অনুসারী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ভার্সিটি এক্সপ্রেস উপপক্ষের নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, শাটল ট্রেনের আসনে বসা নিয়ে তাঁদের কর্মীদের সঙ্গে সিক্সটি নাইনের কর্মীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। এরপর দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়েছে। সিনিয়ররা বসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছেন।
সিক্সটি নাইন উপপক্ষের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জুনিয়রদের মধ্যে শাটল ট্রেনে আসন রাখা নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। তাঁরা এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে প্রক্টর ও পুলিশকে বলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত। দুই পক্ষকেই হলে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।