কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ৯ মাস আগে মারধরের শিকার হয়েছিলেন। তখন তাঁর কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যাঁর বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল, সেই শিক্ষার্থী দুই দিন আগে ক্যাম্পাসের হলে আসেন। আগের ঘটনার জের ধরে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে লালন শাহ হলে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল মারধরের শিকার মিনহাজুল হক রুমন লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। প্রতক্ষ্যদর্শী ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা জলে জানা যায়, মিনহাজুল ছয় মাস আগে হল ছেড়ে চলে যান। দুই দিন ধরে তিনি ক্যাম্পাসের হলে অবস্থান করছিলেন। গতকাল সন্ধ্যার পর ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী হঠাৎ তাঁর কক্ষে যান। পরে তাঁর রুমমেটদের আটকে রেখে মিনহাজুলকে মারধর করা হয়। এ সময় তাঁকে হল ছাড়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
মিনহাজুল হক বলেন, ‘খুলনা যাওয়ার পথে ক্যাম্পাসে ঘুরতে যাই। রাতে কক্ষে ছিলেন। এমন সময় ১০ থেকে ১২ জন মিলে কক্ষে ঢুকে মারধর করে এবং আগামীকালের মধ্যে হল ছাড়ার আলটিমেটাম দেয়। এনামুলের সঙ্গে কয়েক মাস আগে একটা ঝামেলা হয়েছিল। তবে সেটা ছাত্রলীগের সভাপতি তাঁর বাবার উপস্থিতিতে মিটিয়ে দিছিলেন। হয়তো সেই ঘটনার জের ধরে আজ (গতকাল) ওরা এসেছিল।’
আইন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এনামুল হক ইমনের বিরুদ্ধে মিনহাজুল হককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এনামুল হক বলেন, ‘৯ মাস আগে আমাকে মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেন মিনহাজুল ভাই। সে সময় তিনি ছাত্রলীগের ছত্রচ্ছায়ায় ছিলেন। আমি বিচার পাইনি। ছাত্রলীগের সভাপতির কক্ষে আমাকে আর আমার বাবাকে ডেকে হ্যান্ডশেক করিয়ে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেদিন আমি খুবই মর্মাহত হয়েছিলাম। শনিবার বন্ধুরা মিলে মিনহাজুল ভাইয়ের কক্ষে গিয়ে কথা বলি। এ সময় আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এ জন্য মারধর করা হয়েছে। আমি সেই দিন বিচার না পাওয়ায় আজ প্রতিশোধ নিয়েছি।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মাসুদ রুমী বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ আছে, তারা (এনামুল) এর আগে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিল। তারা আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটাচ্ছে। আমরা এমন কাউকে আমাদের দলে যুক্ত করতে চাই না, যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। ছাত্রদল কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপরাজনীতি প্রশ্রয় দেয় না।’
উল্লেখ্য, গত বছর ১৮ নভেম্বর রাতে ‘দ্রুতগতিতে বাইক চালানোর’ কারণে এনামুল হককে থাপ্পড় দিয়ে কানের পর্দা ফাটানোর অভিযোগ ওঠে মিনহাজুল হকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ২৭ নভেম্বর প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এনামুল। পরে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা করে দেন।