পঞ্চগড় সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে গুলি করার কথা স্বীকার করল বিএসএফ

সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার পাশে সশস্ত্র বিএসএফ জওয়ানদের পাহারা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশি যুবক আইনুল হক (৩২) ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে বিএসএফ গুলি করার কথা স্বীকার করেছে।

আইনুলের গুলিবিদ্ধ লাশ বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের গোয়ালগছ সীমান্তের ৪৪৮ নম্বর সীমান্তখুঁটি এলাকায় মহানন্দা নদীর পাড়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে পড়ে ছিল। বেলা তিনটার দিকে বিএসএফ লাশটি উদ্ধার করে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাবান্ধার গোয়ালগছ বিওপির আওতাধীন এলাকার কাছাকাছি ভারতীয় ভূখণ্ডে এক বাংলাদেশি যুবক হত্যার খবর পাওয়ার পর পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আহ্বান জানানো হয়। বিকেলে ওই সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ফাঁসিদেওয়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গুলি করার কথা স্বীকার করেছেন। এ সময় বিএসএফ জানিয়েছে, কয়েকজন চোরা কারবারি কাঁটাতারের বেড়া কেটে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে তারা গুলি চালায়।

পুলিশি ও হাসপাতালের কার্যক্রম শেষে বিএসএফ লাশ হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে।

যুবায়েদ হাসান বলেন, পতাকা বৈঠকে এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে লাশ ফেরত চাওয়া হয়েছে। তবে পুলিশি ও হাসপাতালের কার্যক্রম শেষে বিএসএফ লাশ হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে আইনুল ৪৪৮ নম্বর সীমান্তখুঁটি এলাকায় মহানন্দা নদীর পাড়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে নিহত হন। তিনি বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমগঞ্জ এলাকার আকবর আলীর ছেলে। তাঁর দুই স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে আছে বলে জানা গেছে। তিনি গরু চোরা কারবারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

কুদরত-ই-খুদা আজ দুপুরে জানান, গতকাল গভীর রাতে গোয়ালগছ সীমান্তের ওপারে মহানন্দা নদীর পাড়ে ভারতের ফকিরগছ এলাকায় ফাঁসি দেওয়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে আইনুল হক মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আইনুল হক গরু পারাপারের জন্য ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিলেন। আজ সকালে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ওই যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকার খবর পায় তাঁর পরিবার। পরে বিষয়টি বিজিবিকে জানালে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে জানানো হয়েছে।