মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী
মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী

ভাঙ্গা–সদরপুরে নির্বাচন

শোকজের জবাবে নিক্সন চৌধুরী বললেন, ‘বক্তব্য এডিটিংয়ের মাধ্যমে সংযোজন ও বিয়োজন করা’

ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সদরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তার কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে ভাঙ্গা ও সদরপুরের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তিনি নোটিশের জবাব দেন।

নোটিশের জবাবে নিক্সন চৌধুরী দাবি করেন, ‘আমার যে বক্তব্য আপনাকে জানানো হয়েছে, তা এডিটিংয়ের (সম্পাদনা) মাধ্যমে সংযোজন ও বিয়োজন করে রেকর্ড করা হয়েছে। আমার বিরোধী পক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি অতিরঞ্জিত আকারে প্রচারণা করা হয়েছে।’

ভাঙ্গা ও সদরপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউল হক খান আজ জবাব পাওয়ার বিষয়টি বিকেলে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সংসদ সদস্য তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর মাদ্যমে শোকজের লিখিত জবাব দিয়েছেন।

এর আগে গতকাল সোমবার নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আজ মঙ্গলবার বিকেল চারটার মধ্যে ওই নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়।

নোটিশে বলা হয়, সদরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শহীদুল ইসলাম (আনারস) সংসদ সদস্যের নামে ছড়িয়ে পড়া একটি অডিওর বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। উপজেলা নির্বাচনের (আচরণবিধি) বিধিমালা অনুযায়ী, সংসদ সদস্য ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’। তাই নির্বাচনপূর্ব সময়ে নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে তিনি অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু বিভিন্ন অভিযোগ ও প্রাপ্ত নথি থেকে বোঝা যাচ্ছে, সংসদ সদস্য আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।

নোটিশের জবাবে নিক্সন চৌধুরী উল্লেখ করেন, সদরপুরের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলাম অডিও বা ভিডিও ক্লিপের (হোয়াটসঅ্যাপ) মাধ্যমে তাঁর (নিক্সন) যে বক্তব্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দিয়েছেন, তা এডিটিংয়ের মাধ্যমে সংযোজন ও বিয়োজন করে রেকর্ড করা হয়েছে। তাঁর বিরোধী পক্ষ অতিরঞ্জিত করে বিষয়টি প্রচারণা করেছে। এ ছাড়া নিজের বাড়িতে (সদরপুরে নয়) ঘরোয়া পরিবেশে দেওয়া কিছু বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে।

নিক্সন চৌধুরী আরও বলেন, তিনি কোনো নির্বাচনী প্রচারণা বা সভা–সমাবেশে যাননি। কোনো বক্তব্যও দেননি। এ ধরনের অভিযোগ করা প্রার্থীদের নির্বাচনী কৌশল। এ জন্য তিনি এই জবাব গ্রহণ করে তাঁর বিরুদ্ধে করা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ খারিজ করার আবেদন করেন।

এর আগে গত রোববার বিকেলে নিক্সন চৌধুরীর কণ্ঠসদৃশ একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অডিওতে চেয়ারম্যান প্রার্থী শহীদুল ইসলাম ওরফে বাবুলের উদ্দেশে সংসদ সদস্যকে বলতে শোনা যায়, ‘এমপিগিরি করি আর না করি, বাবুলের অস্তিত্ব আমি সদরপুর থেকে বিদায় করব।...বাবুলের অস্তিত্ব থাকবে না ভাঙ্গা-সদরপুরে। এই নির্বাচনের পর বাবুলের কোনো অস্তিত্ব আমি এই সদরপুরের মাটিতে দেখতে চাই না।’ এরপর প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করা হয়।