জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার বিচারের দাবিতে উপাচার্য মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার রাত পৌনে ৯টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও প্রান্তিক ফটকে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেছিলেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় গেলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের নেতৃত্বে হামলা করা হয়। এ সময় প্রায় ১ ঘণ্টা দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে।
হামলা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ২০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় রাত ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ঢুকে যান এবং হলের ছাদ থেকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে হলের সামনে আন্দোলনকারীরা কিছুক্ষণ অবস্থান করে রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে চলে আসেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব মাহফুজ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে আক্রমণাত্মক হয়ে আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করা হয়েছে। তাঁরা আমাদের হত্যার চেষ্টা করেছেন। আমাদের কাদার মধ্যে এলোপাতাড়ি লাথি মেরেছেন। লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন।’ রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমি দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ আমার ওপর হামলা হয়। এতে মাথা ফেটে গেছে। তবে কারা হামলা করেছে সঠিক জানি না।’
হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কোনো ধরনের হামলা করিনি। আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। তাঁরা আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়েছেন। এতে আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। ক্যাম্পাসে অন্যায্য কোনো কিছু ঘটলে আমরা শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ‘আমরা ঘটনার শুরু থেকে সবাই ছিলাম। গাড়ি দিয়ে আমরা ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা সঠিক তদন্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’