চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পশ্চিম ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সলিম উল্লাহ ওরফে লাভলুর (৫০) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মান্দারতলী গ্রামের একটি বাগান থেকে সলিমের লাশ উদ্ধার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে পূর্বশত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা সলিমকে হত্যা করে ওই বাগানে লাশ ফেলে যায় বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সলিম উল্লাহ উপজেলার মান্দারতলী গ্রামের মৃত আমির হোসেনের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য। সলিম উল্লাহর স্ত্রী সাজেদা আক্তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সলিম উল্লাহ পেশায় ব্যবসায়ী। বাড়ির পাশে তাঁর একটি মুরগির খামার ও একটি করাতকল আছে।
নিহত সলিমের পরিবার ও পুলিশ জানায়, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িতে রাতের খাবার খেয়ে সলিম তাঁর করাতকলের দিকে যান। পথে তিনি একটি চায়ের দোকানে গিয়ে চা পান করেন। তবে এরপর আর সলিমের খোঁজ পাওয়া যায়নি। গভীর রাত পর্যন্ত পরিবারের লোকজন আশপাশের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সলিমের কোনো সন্ধান পাননি। রাতে তাঁর মুঠোফোন নম্বরটিও বন্ধ ছিল।
পুলিশ জানায়, আজ সকালে স্থানীয় লোকজন সলিমের বাড়ির পাশে একটি নির্জন বাগানে তাঁর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন, পরিদর্শক সানোয়ার হোসেনসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
সলিমের স্ত্রী সাজেদা আক্তার অভিযোগ করেন, কয়েক দিন আগে তাঁর ছেলে মো. লাবিব বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল। পথে বাড়ির পাশের কয়েকজন যুবক উদ্দেশ্যমূলকভাবে লাবিবের ওপর মোটরসাইকেল উঠিয়ে দেন। এতে লাবিব আহত হয়। এ নিয়ে ওই যুবকদের সঙ্গে সলিমের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে পরে ওই যুবকেরা বাড়িতে এসে সলিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যান। তাঁরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী বলে তিনি দাবি করেন। ওই বিরোধের জেরেই সলিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক বলেন, সলিম দলের নিবেদিতপ্রাণ নেতা। যে বা যাঁরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
মতলব উত্তর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সানোয়ার হোসেন বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের বাঁ হাত, মুখ ও কানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার তদন্তে চাঁদপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।