বরিশালে প্রায় ২৬ লাখ নগদ টাকা, ১০ হাজার ডলার ও প্রায় এক কেজি সোনার গয়নাসহ গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের এক প্রকৌশলী আটক হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কের চৌমাথা এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালনকালে ওই প্রকৌশলীর গাড়ি তল্লাশি করে এসব অর্থ ও স্বর্ণালংকার পান। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
আটক ওই প্রকৌশলীর নাম মো. হারুন অর রশিদ। তিনি পটুয়াখালী গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আটক প্রকৌশলী এই টাকার সঠিক পরিমাণ ও উৎসের প্রমাণ দিতে পারেননি। তাঁকে পটুয়াখালী জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক সোমা সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে তিনি তাঁকে (হারুন) গ্রহণের জন্য বরিশালে পৌঁছেছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পিতবার নগরের বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করছিলেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে কালো রঙের একটি প্রাইভেট কারে করে পটুয়াখালী থেকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন পটুয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ। বিকেলে বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকায় পৌঁছালে শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত শিক্ষার্থীরা গাড়িটি থামান। পরে গাড়িটি তল্লাশি করে নগদ টাকা, ডলার ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আটক হারুন অর রশিদ বলেন, তিনি পরিবার নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে যে টাকা এগুলো তাঁর স্ত্রীর জমি বিক্রি করা ১২ লাখ এবং অসুস্থ শাশুড়ি মারা যাওয়ার পর অর্জিত টাকা। তিনি বলেন, ‘আমি ৫ বছর ধরে পটুয়াখালীতে কর্মরত। ওই এলাকার একটি পক্ষ আমাকে বেনামে চিঠি দিয়ে হুমকি দিচ্ছিলেন যে আপনি পাঁচ বছর এই জেলায় আছেন। দ্রুত বদলি হয়ে এখান থেকে চলে যান। না হলে আপনার পরিবারসহ আপনাকে বিপদে ফেলা হবে।’
সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিএনসিসির সদস্য শাকিল হোসেন বলেন, হারুন অর রশিদের কাছে বিপুল নগদ টাকা, ডলার, সোনার গয়না ও ব্যাংকের চেক পাওয়া গেলে সেনাবাহিনীর টহল দলকে খবর দেওয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হারুন অর রশিদকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করেন।