সিলেট মহাসড়কে বিএনপির ‘রোডমার্চ’ কর্মসূচিতে বাস-ট্রাক দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রোডমার্চ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকা অতিক্রম করার সময় সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই অভিযোগ করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘এটা হচ্ছে বর্তমান অনির্বাচিত দখলদার সরকারের টিকে থাকার শেষ চেষ্টা। এতে শেষ রক্ষা হবে না। দেশের মালিকানা নিয়ে দেশের মানুষ বাড়ি ফিরবে। আমাদের কর্মসূচি বন্ধ করে, গায়েবি মামলা দিয়ে, গ্রেপ্তার করে, গুম-খুন করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে, শাস্তি দিয়ে, জেলে পাঠিয়ে কোনোভাবে রক্ষা হবে না। সম্পূর্ণ অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত কেউ বাড়ি ফিরবে না।’
আমীর খসরু মাহমুদ আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ পর্যবেক্ষক পাঠাবে না, যেহেতু বাংলাদেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। এর অর্থ হচ্ছে, নিরপেক্ষ সরকার ব্যতীত বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক দিন নাটক করে জনগণকে দেখাতে চায়, তারা বিপদ কাটিয়ে উঠেছে।’
দুপুর ১২টার দিকে ভৈরব থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চের অগ্রভাগে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের গাড়িবহর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরাইল উপজেলার বিশ্বরোড মোড় এলাকায় এসে পৌঁছায়। সেখানে গাড়িতে বসেই সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে তরুণ সমাজ আজ জেগে উঠেছে। শেখ হাসিনার সরকারকে আর কোনো শক্তিই রক্ষা করতে পারবে না। তারুণ্যের যে রোডমার্চ শুরু হয়েছে, তা সরকার পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।’
এই সময় গাড়িবহরে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান, কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব, কুমিল্লা সাংগঠনিক বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম প্রমুখ।
বিএনপির পূর্বঘোষিত রোডমার্চ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি উপজেলা বিএনপিসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে শুরু করে সরাইল বিশ্বরোড মোড়, কুট্টাপাড়া মোড় ও বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হন। দলীয় নেতা-কর্মী ও যানবাহনের ভিড়ে আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে বিজয়নগর উপজেলার সাতবর্গ পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা দেড়টার পর থেকে ধীরগতিতে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসেন বলেন, ‘সকাল সাতটা থেকে মহাসড়কের দায়িত্ব পালন করেছি। রোডমার্চকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’
বিএনপির রোডমার্চটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে।