ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ফারাক্কা ব্যারাজের গেট খুলে দেওয়ার পর রাজশাহীতে পদ্মা নদীর তীরে উৎসুক মানুষের ভিড় বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই নদীর তীরে কাঠি পুঁতে পানির উচ্চতা মেপে দেখছেন।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, আজ মঙ্গলবার সকাল সকাল ৬টায় পদ্মা নদীর রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩০ মিটার। এর আগের ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময়ে পানির একই উচ্চতা আছে। সেখানে বিপৎসীমার দেড় মিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
এর আগে গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় একই পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৩০ মিটার। সন্ধ্যা ছয়টাতেও একই উচ্চতা ছিল। আজ সকাল ছয়টাতেও একই উচ্চতা রয়েছে। রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৮ মিটার।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার (পানির উচ্চতা পরিমাপকারী) এনামুল হক জানান, রাজশাহী থেকে ফারাক্কার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের বেশি। হিসাব অনুযায়ী আজ সন্ধ্যা নাগাদ ফারাক্কার পানি ছাড়ার প্রভাব রাজশাহীতে বোঝা যেতে পারে। কেননা, পানি আগে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় ছড়াবে। তারপর প্রবাহ বেশি থাকলে রাজশাহীতে আসবে। সে ক্ষেত্রে রাজশাহীতে পৌঁছাতে দুই থেকে তিনি দিন সময় পাওয়া যায়।
এদিকে গতকাল ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার খবরে রাজশাহীর মানুষের মধ্যে কৌতূহল বেড়ে যায়। বন্যার আশঙ্কায় রাত থেকেই পদ্মার ধারে পানি দেখতে ভিড় করেন লোকজন। গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকেও নদীর ঘাটে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা যায়।
আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নগরের আলুপট্টি ঘাটে গিয়ে একই দৃশ্য দেখা যায়। এমদাদুল হক নামের এক ব্যক্তি নদীর পানিতে পুঁতে রাখা কাঠি দেখছিলেন। কাঠির একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নীল রঙের সুতা বাঁধা আছে। এগিয়ে দেখা গেল, পদ্মার পানি সুতা বরাবরই আছে। তবু এমদাদুল হক দাবি করেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, পানি সামান্য একটু বেড়েছে।’
ভারতের বিহারের গঙ্গায় পানির স্তর অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় অবস্থিত ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেটের সব কটি খুলে দেওয়া হয়েছে বলে ভারত সরকারের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফারাক্কা ব্যারাজে পানির স্তর বিপৎসীমার ৭২ ফুট ছাড়িয়েছে। নিয়ন্ত্রিতভাবে ১০৯টি গেট থেকে পানি ছাড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।