সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট ও লাইভে এসে মিথ্যাচার করার অভিযোগে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার আগানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এ জিডি করেন।
আগানগর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার রাতে দুর্গাপূজা শেষে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার সময় তুচ্ছ ঘটনার জেরে র্যাব সদস্যদের সঙ্গে তাঁদের অনাকাঙ্ক্ষিত ও ভুল–বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ও লাইভে এসে বলেন, ‘প্রতিমা বিসর্জনে আমি (ইউপি চেয়ারম্যান) বাধা দিয়েছি।’ এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট ও লাইভ করে তিনি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। এর প্রতিবাদে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় জিডি করা হয়েছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় বুধবার রাতে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দেন এবং লাইভে এসে অপপ্রচার চালান। এ ঘটনায় গতকাল তাঁর বিরুদ্ধে আগানগর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ জিডি করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি অনুপ কুমার বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, যানজট নিরসন করতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর ও র্যাব সদস্যদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। এতে বিসর্জনের কাজ ঘণ্টাখানেক বন্ধ থাকে। ইউপি চেয়ারম্যান তাঁদের কোনো বাধা দেননি, বরং পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। অথচ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিপুণ রায় ফেসবুকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিমা বিসর্জনে বাধা দেওয়ার কথা বলেছেন। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করেছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নিপুণ রায় চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
জানা গেছে, গত বুধবার রাত নয়টার দিকে নিপুণ রায় নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন আগানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর শাহ খুশি নাগরমহল ঘাটে মা দুর্গা দেবীর বিসর্জনে বাধা প্রদান করেন, যা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শামিল। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগসহ তাদের দলীয় নেতৃবৃন্দ মা দুর্গা দেবী বিসর্জন দিতে দিচ্ছে না।’ এরপর ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কেউ নিরাপদ না। তারা হিন্দুদের জমিজমা দখল করে নিচ্ছে। এমনকি দেবী দুর্গার বিসর্জনে বাধা দিচ্ছে।’