‘আমাদের কাছে দায়িত্ব পালন ও জনসেবাই প্রধান। আগে দেশের সেবা। পরে ছুটিছাটা। এ জন্য এবারের ঈদসহ গত দুই ঈদে বাড়ি যেতে পারিনি। বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়ে আছে। তাদের ছাড়াই ঈদ করতে হয়েছে। তাতে দুঃখ নেই। কর্তব্য ঠিকমতো করতে পারছি, এটাই বড়। স্বজনদের কথা ভাবলে তো দেশসেবা হবে না। আপাতত অফিসের সবাইকে স্বজন বানিয়ে ফেলেছি। ঈদের সেমাই ও খাবার রান্না করে সবাই একসঙ্গে খেয়েছি।’
এভাবেই নিজেদের ঈদ উদ্যাপনের কথা বলছিলেন চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপকর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী। তাঁর কার্যালয়ের বেশির ভাগ কর্মী এবারের ঈদে ছুটি পাননি। গতকাল সোমবার স্বজনদের ছাড়া তাঁরা ঈদ উদ্যাপন করেছেন। নিজেরা রান্না করে ঈদের সেমাই, পোলাও ও মাংস খেয়ে সহকর্মীদের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন তাঁরা।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মী (ফায়ার ফাইটার) মিলিয়ে মোট ২৭ জন দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে এবার ঈদের ছুটি পেয়ে বাড়িতে গেছেন মাত্র ছয়জন। বাকি ২১ জন জরুরি সেবার দায়িত্ব পালনের জন্য ছুটি পাননি।
আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দগরপুর বাজারে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে গিয়ে প্রায় সব অগ্নিনির্বাপণকর্মীকে দেখা গেল। কেউ কেউ কার্যালয়ের সামনে গাড়িতে উঠে কোথাও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ আবার দাপ্তরিক কাজকর্ম সারছেন। কাজের ফাঁকে কেউ কেউ একে–অন্যের পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
অগ্নিনির্বাপণকর্মী মির্জা কালিম উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক মাস আগে তিনি যোগদান করেছেন। বাড়ি মাগুরায়। বাড়িতে মা এবং ভাই-ভাবি আছেন। ছুটি না পাওয়ায় ঈদে বাড়িতে যেতে পারেননি। স্বজনদের ছাড়াই এখানে ঈদ করতে হলো। সহকর্মীদের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পেরে সময়টা ভালোই কাটিয়েছেন। যদিও মাকে বেশি মনে পড়েছে। দেশসেবা করতে গেলে তো আবেগ বিসর্জন দিতে হবে, মন্তব্য করেন তিনি।