ব্যাটারিচালিত রিকশার ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আফসানা করিমের (রাচি) মৃত্যুর ঘটনায় ১১ দফা দাবি জানিয়ে মাথায় সাদা কাপড় বেঁধে শোকমিছিল করেছেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের করেন তাঁরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন ও পুরোনো প্রশাসনিক ভবন হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় তাঁরা ১১ দফা দাবি জানান। দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
পরে বাসভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম। এ সময় শিক্ষার্থীদের অতি দ্রুত দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে আফসানার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের যথাযথ বিচার, আফসানাকে মরণোত্তর ডিগ্রি প্রদান; কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের একটি অংশ আফসানার নামে নামকরণ; আগামী শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া-মাহফিলের আয়োজন; ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সড়কবাতি, ফুটপাত ও গতিরোধক স্থাপন এবং যানবাহনে গতি পরিমাপক রাখা; আফসানার পরিবারকে যথাযথ আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান; চিকিৎসাকেন্দ্রে জরুরি সেবার মানোন্নয়ন; নিবন্ধনহীন সব যানবাহন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা ও নিবন্ধন প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা; সব রিকশাচালকের প্রশিক্ষণপূর্বক নিবন্ধন নিশ্চিত করা; অদক্ষ নিরাপত্তাকর্মীদের প্রত্যাহার করা এবং সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল করা।
ইংরেজি বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী চিশতি বলেন, উপাচার্য তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সবকিছু বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি কিছু কার্যক্রমের সাময়িক অবস্থা লিখিত আকারেও প্রকাশ করেন। তাঁরা সাময়িকভাবে আশ্বস্ত হয়েছেন। কিন্তু হত্যাকারীর দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ৫৩ ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আফসানা করিমের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি প্রশাসনিক সভা করেছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের পেশ করা দাবিগুলোকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান, নিহত শিক্ষার্থীর নামে রাস্তার নামকরণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাগুলোকে প্রশস্তকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।