রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের খেলা শেষে স্লেজিং (কটুকথা) করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষক-সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে মার্কেটিং ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাগ দুটির শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটাসহ অবস্থান নিলে পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ প্রতিবেদন লেখার সময় (সন্ধ্যা সাতটা) বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটকে মার্কেটিং বিভাগ ও পেছনের ফটকে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহত শিক্ষক মাহফুজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি মাথায় আঘাত পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত সাংবাদিক আবু সালেহ শোয়াইব বণিক বার্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। এ ছাড়া আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল ও তানজিল আহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে আহত অন্য শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের রাউন্ড-১৬–এ মার্কেটিং বিভাগ ও আইন বিভাগের খেলা হয়। এতে মার্কেটিং বিভাগ ১-০ গোলে জয়ী হয়। খেলা চলাকালে উভয় পক্ষের দর্শকেরা স্টেডিয়ামে অবস্থান করছিলেন। গোল হওয়ার একপর্যায়ে উভয় পক্ষ একে-অপরকে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিলে বাগ্বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। খেলা শেষে স্টেডিয়াম গেটে আইন ও মার্কেটিং বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইন বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুর রহমান মাথায় ইটের আঘাত পেয়ে আহত হন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল বের করেন। এ সময় মিছিলের ভিডিও ধারণ করতে গেলে সাংবাদিক আবু সালেহকে মারধর করে মুঠোফোনের ভিডিও ডিলিট করতে বাধ্য করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাঈদা আঞ্জু বলেন, আহত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছেন। বিভাগের শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নুরুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, আন্তবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাঁরা ঘটনাস্থলে থেকে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছেন।