পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতিসহ ছয় নেতা দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ শনিবার বিকেলে কাউখালী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতারা হলেন উপজেলা জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া, সহসভাপতি সিকদার মো. দেলোয়ার হোসেন ও শাহ আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ লিটন ও নেপাল চন্দ্র দে, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. খসরু মিয়া।
আবু সাঈদ মিয়া বলেন, পিরোজপুর-২ আসনের (কাউখালী-ভান্ডারিয়া-ইন্দুরকানি) সংসদ সদস্য জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। অথচ উন্নয়নের ক্ষেত্রে কাউখালী চরমভাবে অবহেলিত। গত ফেব্রুয়ারিতে সংসদ সদস্য কাউখালীতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ঘোষণা দেন, কাউখালী বাজারের খাজনা জনগণের পক্ষে তিনি পরিশোধ করবেন। জনগণকে হাটবাজারে খাজনা দিতে হবে না। কিন্তু তিনি খাজনার টাকা পরিশোধ করেননি। তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সেই খাজনার টাকা পরিশোধ করেছেন। বিষয়টি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে জানালে তিনি কোনো টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। এসব কারণে তিনি জেপি থেকে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আবু সাঈদ মিয়ার কাছে অন্য কোনো দলে যোগ দেবেন কি না সাংবাদিকেরা জানতে চান। তখন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপাতত কোনো দলে যোগ দেব না।’
জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর একান্ত সচিব মেজবাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শুনেছি আবু সাঈদ মিয়া অর্থনৈতিক সমস্যায় আছেন। একটি মহল এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আবু সাঈদ মিয়াকে জেপি থেকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন।’
উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজের বিরোধ আছে। মহিউদ্দিন মহারাজ এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তিনি গণসংযোগ করছেন। স্থানীয় লোকজন মনে করছেন, আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সঙ্গে বিরোধের জেরে জেপির নেতারা পদত্যাগ করে মহিউদ্দিন মহারাজের সঙ্গে যোগ দেবেন।
এর আগে গত ১৮ জুন উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জেপির চেয়ারম্যান প্রার্থী সিকদার মো. দেলোয়ার হোসেন মহিউদ্দিন মহারাজের অনুরোধে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। ওই ইউপিতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। মহিউদ্দিন মহারাজ একসময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন। ২০১০ সালের পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
গত ১৭ জুলাই ভান্ডারিয়া পৌরসভায় প্রথম ভোট অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জেপির মেয়র প্রার্থীকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফাইজুর রশিদ জোমাদ্দার বিজয়ী হন। পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর বিজয়ে ভূমিকা রাখেন মহিউদ্দিন মহারাজ ও তাঁর ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম।