সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অস্ত্র জমা দেননি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক আলোচিত মেয়র প্রয়াত আবু তাহেরের ছেলে।
ছাত্র–জনতার গণ–আন্দোলনকে ঘিরে গত ৪ আগস্ট সংঘর্ষে পুরো লক্ষ্মীপুর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। টানা ৪ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থী–জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন ও তাঁর বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে সালাহ উদ্দিনের অস্ত্র থেকেও সেদিন গুলি ছোড়া হয়। এতে ৪ শিক্ষার্থীসহ ১২ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত শতাধিক। এর মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন গুলিবিদ্ধ।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ওই দিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বাসভবনের ছাদের ওপর থেকে টিপু ও তাঁর লোকজন আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেন। এতে ৪ জন শিক্ষার্থীসহ ১২ জন নিহত হন। শতাধিক শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের হত্যার ঘটনায় সালাহ উদ্দিন টিপুকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে আওয়ামী লীগের সালাহ উদ্দিনসহ অনেক নেতা-কর্মী আত্মগোপন করেন।
জেলা প্রশাসনের জে এম শাখার তথ্যমতে, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরে জেলা প্রশাসন ব্যক্তিমালিকানা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করে ৩৫টি। এসব লাইসেন্সের বিপরীতে ৩৫টি আগ্নেয়াস্ত্র কেনা হয়। কিন্তু গত মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন থানায় জমা পড়েছে ৩৪টি আগ্নেয়াস্ত্র। জমা পড়া অস্ত্রের মধ্যে পিস্তল ১৫টি, শটগান ১৭টি, বন্দুক ১টি ও রাইফেল ১টি।
অবশিষ্ট ১টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়েনি। সেটি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিনের অস্ত্র। মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত লাইসেন্স করা আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেওয়ার সর্বশেষ সময় নির্ধারণ করা ছিল।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান প্রথম আলোকে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইসেন্সের বিপরীতে কেনা ১টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেননি। এখন সেসব অবৈধ হয়ে গেছে। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তা ছাড়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে মাঠে নেমেছে যৌথ বাহিনী।