বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর অন্যতম ‘সমন্বয়ক’ দাবি করা সোহেল রানার ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ৩টায় রাজশাহী নগরের সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এ সমাবেশ হয়।
‘রাষ্ট্রসংস্কার ছাত্র আন্দোলন’ রাজশাহীর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। হামলার শিকার সোহেল রানা রাজশাহী কলেজের ছাত্র এবং রাষ্ট্রসংস্কার ছাত্র আন্দোলনের বিভাগীয় সংগঠক। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠ ও মাদ্রাসা ময়দান এলাকায় দুই দফা হামলা চালানো হয় তাঁর ওপর। হাতুড়িপেটায় আহত হওয়ার পর তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রসংস্কার ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার আহ্বায়ক খালিদ হাসান। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সোহেল রানা রাজশাহীতে প্রথম সারিতেই ছিলেন। তাঁর ওপর হামলা মেনে নেওয়া যায় না।
খালিদ হাসান বলেন, হামলার আশঙ্কায় সোহেল রানা পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ সোহেল রানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ভাইয়েরা, আপনারা হলেন জনগণের চাকর, জনগণের সেবক। মানুষের নিরাপত্তা দিতে না পারলে খুলে ফেলেন ওই পোশাক।’
আর কোনো সমন্বয়কের ওপর হামলা হলে ছাত্রসমাজ বসে থাকবে না, এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে খালিদ হাসান বলেন, ছাত্রদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে। আজ সোহেলের ওপর হামলা হয়েছে। কাল আরেকজন হামলার শিকার হবেন। এমন চলতে থাকলে ছাত্রসমাজ বসে থাকবে না।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহমুদ জামাল কাদেরী, জেলা শাখার সমন্বয়কারী হোসেন আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাকিম হোসেন, রাষ্ট্রসংস্কার ছাত্র আন্দোলনের মহানগরের সদস্য মো. শান্ত, মোহনপুর উপজেলার সদস্যসচিব ইমন হাসান, যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন-অর-রশিদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহীতে কোনো সমন্বয়ক পরিষদ গঠিত হয়নি। তবে রাজশাহী কলেজের যেসব শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকেছেন, তাঁদের কেউ কেউ নিজেকে ‘রাজশাহীর সমন্বয়ক’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। সোহেল রানা তেমনই একজন।
গত বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় তিনজন সমন্বয়ক আসেন কমিটি গঠন করতে। শিক্ষার্থীদেরই একটি অংশ অভিযোগ তোলে, এক ভুয়া কেন্দ্রীয় সমন্বয়ককে নিয়ে এসে এই কমিটি করা হচ্ছে। এ অভিযোগে ওই কেন্দ্রীয় সমন্বয়ককে মারধরও করা হয়। দুই দফা মারধরের শিকার হন রাজশাহীতে আন্দোলনে সক্রিয় থাকা সোহেল রানাও।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সোহেল রানা সাংবাদিকদের বলেন, রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের জয়, রুহুল আমিনসহ ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী দুই দফায় তাঁকে হাতুড়ি ও বাঁশ দিয়ে ইচ্ছেমতো পিটিয়েছেন।
সোহেলের এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সংবাদ সম্মেলন করেছে রাজশাহী নগর ছাত্রদল। সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, সোহেল আগে জাসদ ছাত্রলীগ করতেন, তিনি ভুয়া সমন্বয়ক। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিনি ছাত্রদলকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।