নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হজরত বিবি খাদিজা হলের একটি কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হল থেকে বেরিয়ে আসেন আতঙ্কগ্রস্ত ছাত্রীরা। গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটায়
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হজরত বিবি খাদিজা হলের একটি কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হল থেকে বেরিয়ে আসেন আতঙ্কগ্রস্ত ছাত্রীরা। গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটায়

নোবিপ্রবি

আগুনের পর বিস্ফোরণ, মধ্যরাতে আতঙ্কে হল ছেড়ে রাস্তায় ছাত্রীরা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হজরত বিবি খাদিজা হলে মধ্যরাতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হলে আতঙ্কগ্রস্ত ছাত্রীরা হল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন রাস্তায়। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। একই সময় হলের সামনের একটি ট্রান্সফরমারেও বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পুরো হলে ছাত্রীদের আরও বেশি মাত্রায় ভয়ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুই ছাত্রী। তাঁদের তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে, পরে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় হজরত বিবি খাদিজা হল প্রশাসন ও ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হজরত বিবি খাদিজা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের প্রায় ৪৫০ ছাত্রী থাকেন। গতকাল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তৃতীয় তলার ৩০৬ নম্বর কক্ষে বৈদ্যুতিক লাইনের শর্টসার্কিট থেকে কক্ষের ভেতর অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এ সময় সুইচবোর্ডসহ পুরো কক্ষের বিদ্যুৎ লাইন পুড়ে যায়। একই সময় পুড়ে যায় নিচতলায় সুইচ রুমের মূল সুইচও। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুরো হলের ভেতর ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ায় ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

হল প্রশাসন সূত্র জানায়, আগুনের ধোঁয়ায় ও আতঙ্কে দুজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরের নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুই ছাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন চিকিৎসকেরা। পরে তাঁদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবারের সব পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর।

হলে বসবাসকারী ছাত্রী জেরিন ফেরদাউস প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিচতলায় থাকেন। তৃতীয় তলার একটি কক্ষের ভেতর বৈদ্যুতিক লাইনে আগুন লাগার খবরে এবং চারদিকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তে দেখে তাঁরা সবাই দ্রুত হল থেকে বের হয়ে সামনের ফাঁকা জায়গায় অবস্থান নেন। তখন মূল ফটক বন্ধ ছিল। এমন সময় হলের সামনের বিদ্যুতের খুঁটিতে লাগলে ট্রান্সফরমারও বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ছাত্রীদের মধ্যে আরও বেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা হল থেকে বের হয়ে সামনের ফাঁকা জায়গায় অবস্থান নেন। পরে হল প্রশাসনের কর্মকর্তারা, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও হলে এসেছেন।

হজরত বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট মো. মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে ছাত্রী হলের তৃতীয় তলার ৩০৬ নম্বর কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। এতে ওই কক্ষের বিদ্যুৎ লাইনগুলো ও সুইচবোর্ড পুড়ে যায়। একই সময় পুড়ে যায় নিচতলার সুইচ রুমের মূল সুইচও। তিনি বলেন, আগুনের ফলে তীব্র ধোঁয়ার সৃষ্টি হওয়ায় ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা সবাই হল থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে হলে বিদ্যুতের মূল লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবারের সব পরীক্ষা স্থগিত করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর।

মামুনুর রশিদ আরও বলেন, অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দুই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন তাঁরা সুস্থ আছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণে হলের একটি অংশের বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কক্ষ ও সুইচ রুমের বিদ্যুতের লাইনের জরুরি সংস্কারকাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করা যায়, অল্প সময়ের মধ্যেই পুরো হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।