মাধবদীতে গ্যাস–সংযোগের বিস্ফোরণে নারী, শিশুসহ এক পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ

নরসিংদী জেলার মানচিত্র
প্রতীকী ছবি

নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে গ্যাস-সংযোগের ছিদ্র থেকে হওয়া বিস্ফোরণে নারী, শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। আজ সোমবার ভোর চারটার দিকে উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের বড় গদাইরচর এলাকার একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ ওই পাঁচজন বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।

দগ্ধ পাঁচজন হলেন বড় গদাইরচর এলাকার মৃত মোতালেব মিয়ার ছেলে শামীম মিয়া (৪০), শামীমের স্ত্রী আকলিমা (৩২), তাঁদের মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৪) ও রিয়ামনি (৯) এবং শামীমের ছোট ভাই রশিদ মিয়া (৩৫)। বিস্ফোরণের সময় তাঁরা ঘুমাচ্ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড় গদাইচর এলাকায় পাশাপাশি দুটি টিনশেড ঘরে বসবাস করেন পরিবারটির সদস্যরা। ওই দুই ঘরের মাঝবরাবর অবৈধ গ্যাসলাইনের একটি পাইপ আছে। ওই পাইপের একটি ছিদ্র থেকে বের হওয়া গ্যাস শামীমের পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে ছিল। ভোর চারটার দিকে আকলিমা রান্না বসাতে চুলায় আগুন দিলে হঠাৎই বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আকলিমাসহ ঘুমন্ত অবস্থায় শামীম, সানজিদা, রিয়ামনি ও রশিদ দগ্ধ হন। এ সময় ঘর দুটির বিভিন্ন জায়গার দেয়াল ফেটে যায়।

বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে ও দগ্ধ ব্যক্তিদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের উদ্ধার করেন। এ সময় তাঁদের স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক দ্রুত ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই পাঁচজনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

দগ্ধ শামীম মিয়ার ভাগনে মাইনুদ্দীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকাল ১০টায় এখানে ভর্তির পর থেকেই তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এখনো আমাদের জানানো হয়নি, কার শরীরের কত অংশ পুড়েছে। ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় মামা শামীম মিয়া, মামি আকলিমা বেগম ও মামাতো বোন সানজিদা আক্তারের দুই হাত ও মুখমণ্ডল পুড়ে ঝলসে গেছে। এ ছাড়া মামা রশিদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যাওয়ার পাশাপাশি কান থেকে রক্ত পড়ছে। কিছুক্ষণ আগে তাঁর সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। তাঁকে অন্যত্র পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

স্থানীয় মানুষেরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী আলগী এলাকার মানিক মিয়া বিভিন্ন বাসাবাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস-সংযোগ দিচ্ছেন। সম্প্রতি শামীম মিয়ার বাড়ির পাশের ড্রেন দিয়ে বিলকিস নামের এক নারীর বাড়িতে অবৈধ গ্যাসের সংযোগ দেন মানিক মিয়া। ধারণা করা হচ্ছে, শামীম মিয়ার বাড়ির শৌচাগারের পাইপ দিয়ে শামীমের ঘরে ঢুকে পড়েছিল ওই গ্যাস। এতেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আশঙ্কাজনক অবস্থায় দগ্ধ পাঁচজনকে ঢাকায় পাঠানোর ঘটনা শুনে এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ধারণা করা হচ্ছে, গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে পড়া গ্যাসের গন্ধও পেয়েছি। তবে গ্যাসলাইনটি অবৈধ কি না, তা নিশ্চিত নই। এই বিষয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।’