নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থকের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেনবাগ উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের কাজিরখিল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া একই ইউনিয়নের মজুমদারহাট বাজারে ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে এই দুই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহসভাপতি মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়ার ওই সমর্থকের নাম ফয়েজ উল্যাহ। তিনি বীজবাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়কে নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন তিনি।
স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের লোকজন এই হামলার সঙ্গে জড়িত। তাঁরা এর আগেও ছাতারপাইয়া ইউনিয়নে তাঁর সমর্থকের বাড়িতে হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটিয়েছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনের কাছে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
তবে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম হামলা ও গুলির অভিযোগকে সাজানো বলে দাবি করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, যে ইউপি সদস্যের কার্যালয়ে হামলার গল্প সাজানো হয়েছে, তিনি খারাপ প্রকৃতির লোক। তিনি নিজেই নিজের ঘরে ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে অপপ্রচার করছেন। কোনো ধরনের সন্ত্রাস ও সহিংসতায় তিনি বিশ্বাসী নন।
ইউপি সদস্য ফয়েজ উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর কার্যালয়টি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমানের নির্বাচনী কার্যালয় হিসেবে তিনি ব্যবহার করছেন। নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীর স্থানীয় কেন্দ্র কমিটির দায়িত্বে আছেন তিনি। গতকাল রাত ১১টার দিকে কার্যালয় বন্ধ করে বাড়িতে যান তিনি। কিছুক্ষণ পরই তাঁর বাড়ির সামনে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনেন। বেরিয়ে এসে দেখেন বাড়ির সামনে তাঁর কার্যালয়ের ভেতরে আগুন জ্বলছে। এ সময় আশপাশের মানুষ এগিয়ে এসে আগুন নেভান। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কারণেই ওই হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
বীজবাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাজিরখিল গ্রামের মজুমদারহাট বাজারে একদল দুর্বৃত্ত তিনটি মাইক্রোবাস নিয়ে এসে মহড়া দেয়। তারা এ সময় বাজারে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসা ও বিস্ফোরিত ককটেলের অংশ উদ্ধার করে। পরে সেনবাগ থানা থেকে পুলিশ গিয়ে সেগুলো জব্দ করে।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন ইউপি সদস্যের ব্যক্তিগত কার্যালয় তথা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের হামলা-ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হামলাকারীরা কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর করে এবং পোস্টারে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী মজুমদারহাটে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি করে। এ ঘটনায় আজ দুপুর পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।