কক্সবাজারের টেকনাফ সদরে অটোরিকশা থামিয়ে দুই মৎস্য ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর খবর পেয়ে তাঁদের উদ্ধারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ার রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। ওসি আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে অপহৃত ব্যক্তিদের নাম ও পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারলেও তাঁরা টেকনাফের স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী বলে জানতে পেরেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, সকালে টেকনাফ পৌরসভার বাসস্টেশন থেকে অটোরিকশায় (সিএনজি) উখিয়ার সোনারপাড়া-টেকনাফ এলজিডি সড়ক হয়ে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর যাচ্ছিলেন দুই মাছ ব্যবসায়ী। এ সময় গাড়িতে তাঁদের সঙ্গে আরও এক যাত্রী ছিলেন। গাড়িটি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ার রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে পাঁচ-ছয়জন দুর্বৃত্ত গাড়ির গতি রোধ করে দুই মাছ ব্যবসায়ী ও অপর যাত্রীকে অস্ত্রের মুখে নিয়ে যায়। তবে কিছু দূর গিয়ে দুই মাছ ব্যবসায়ীকে রেখে অপর যাত্রীকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।
ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরে অবস্থান করছিলেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুরবিল মাঠপাড়ার স্থানীয় এক বাসিন্দা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার সময় ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে অবস্থান করছিলেন তিনি। দুর্বৃত্তদের অস্ত্রের মুখে দুজন ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যেতে দেখেছেন। তিনি কৌশলে নিজের মুঠোফোনে ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। পরে বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানান। অপহরণকারী ব্যক্তিরা স্থানীয় বাসিন্দা বলে তিনি দাবি করেছেন।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার এবং অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত ওই দুজনের পরিবারের কাছ থেকে কোনো ধরনের লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
এর আগে ২ নভেম্বর সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং করাচিপাড়ার পাহাড়ি এলাকায় খামারে কাজ করার সময় একদল সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে তিনজন রোহিঙ্গা ও ছয়জন স্থানীয় বাসিন্দাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে ২ লাখ ৭৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেয়।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, গত এক বছরের বেশি সময়ে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৪৫ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের মধ্যে ৮৮ জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৭ জন রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৭৮ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।