ছাদ দিয়ে পানি পড়া ঠেকাতে অনেকে পলিথিন টানিয়েছেন। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুটি ভবন সম্পূর্ণ খালি। চারটিতে পরিত্যক্ত ভবন লেখা সাইনবোর্ড।
ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে। মেঝে ও সিঁড়িরও একই অবস্থা। দরজা-জানালার বেশির ভাগই ভাঙাচোরা। বৃষ্টি হলে ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। এসব ভবনের দেয়াল ও ছাদে জমেছে শেওলা। আশপাশ আগাছায় ভরে গেছে। এমন চিত্র খুলনার কয়রা উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের থাকার জন্য নির্মিত আবাসিক ভবনগুলোর।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হরসিদ রায় ও উপজেলা পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মুকুল কুমার সোম অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই থাকছেন আবাসিক ভবনে। তাঁরা জানান, বাইরে বাসাভাড়া তুলনামূলক বেশি এবং অফিস থেকে অনেক দূরে হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে কোয়ার্টারে থাকতে হচ্ছে। সেখানে বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ছে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ছাদ দিয়ে পানি পড়া ঠেকাতে অনেকে পলিথিন টানিয়েছেন। বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় দুটি ভবন সম্পূর্ণ খালি। অন্য চারটিতে পরিত্যক্ত ভবন লেখা সাইনবোর্ড উপেক্ষা করে দু-একজন করে থাকছেন।
উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের থাকার জন্য ছয়টি আবাসিক ভবনের সব কটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের থাকার জন্য ছয়টি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর পৃথক দুটি বাংলো নির্মাণ করা হয়। সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকা হওয়ায় ভবনগুলো নাম সুন্দরী, গেওয়া, বাইন, কাঁকড়া, গরান ও ধুন্দল। বর্তমানে এসব ভবনের কোনোটিই বাসযোগ্য নয়। থাকার জায়গার অভাবে অনেকেই এসব ভবনে ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন।
উপজেলা পরিষদের কম্পাউন্ডের মধ্যে আনসার ভিডিপি, সেটেলমেন্ট, পরিসংখ্যান ও সমাজসেবা কার্যালয়ের জন্য আধা পাকা টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়। এসব ভবন দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অনাথ কুমার বলেন, সারা দিন ভয়ের মধ্যে অফিস করতে হয়। ছাদের লোহার রড বেরিয়ে গেছে। দরজা-জানালা অনেক পুরোনো হওয়ায় ঠিকমতো আটকানো যায় না।
ইউএনও মো. রোকুনুজ্জামান বলেন, ভবনগুলোকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরিষদের মাসিক সভার রেজল্যুশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।