নীলফামারীর ব্যস্ততম সৈয়দপুর রেলস্টেশনের কাছে ২ নম্বর রেলগেট অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। গেটের উভয় পাশে পুরোনো কাপড় বা শীতবস্ত্রের অস্থায়ী বাজার বসেছে। এতে যেকোনো সময় ট্রেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রেললাইনের উভয় পাশে ১৪৪ ধারা জারি রাখার বিধান রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। রেলপথের ওপর বাজার বসানো তো দূরের কথা, রেললাইনের ওপর দিয়ে পথচারী চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা আছে বিদ্যমান আইনে। ওই আইন লঙ্ঘন করে সৈয়দপুর ২ নম্বর রেলগেটের উভয় পাশে পুরোনো কাপড়ের বাজার বসানো হয়েছে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রেলগেট এলাকায় অনেক লোকের আনাগোনা। রেলপথের ওপরেই বসেছে দোকানপাট। এর মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি ট্রেন দ্রুতগতিতে এলাকা অতিক্রম করে। ট্রেন আসায় লোকজন ও ক্রেতারা এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করেন। একটু অসাবধান হলে প্রাণহানি ঘটতে পারে।
অস্থায়ী বাজারে কথা হয় পুরোনো কাপড়ের দোকানি হায়দার আলীর (৪৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সৈয়দপুর শহরে কোনো হকার্স মার্কেট নেই। আমরা যারা স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ী আমরা কোথায় বসব? বাধ্য হয়ে রেললাইনে বসেছি।’ এভাবে দোকান বসানো অবৈধ জানালে হায়দার আলী বলেন, ‘বৈধ-অবৈধ বুঝি না। পেটের ধান্দা বড় ধান্দা।’
সৈয়দপুরের পাশের দিনাজপুরের চিরিরবন্দর এলাকা থেকে এসেছিলেন অমিছা বেগম (৫০) নামের এক ক্রেতা। তিনি বলেন, এ বাজারে কম দামে শীতের কাপড় পাওয়া যায়। ১০০ থেকে ২০০ টাকায় ভালো সোয়েটার পাওয়া যায়। তাই তাঁরা এসেছেন। বড় দোকানে গিয়ে শীতের কাপড় কেনার সামর্থ্য তাঁদের নেই।
সৈয়দপুরের স্টেশনমাস্টার ওবায়দুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবছর শীতের সময় রেলগেট এলাকায় কাপড়ের অস্থায়ী বাজার বসে। গত বছর শীতের সময় সেখানে তিনজন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। ফলে বাজারটি উচ্ছেদে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কয়েকবার উচ্ছেদও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। নতুন করে আবার বাজার বসে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ-উন নবী বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেছিলাম। রেললাইনের ওপর থেকে বাজার সরিয়ে নিতে অনুরোধ করেছি। ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো কেউ দোকান সরিয়ে নেয়নি। এরপর আমরা উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেব।’