ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় অন্তত ৪০টি বাড়ি ভাঙচুর করার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনে জয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা আরিফ রেজা ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শামীম হোসেন মোল্যার সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
আজ বুধবার সকালে উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বন্দেখালী গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
পুলিশ, দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্দেখালী গ্রামে পরাজিত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম হোসেন মোল্যার সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন এবং জয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফ রেজা মন্নুর পক্ষে আতিয়ার রহমান নির্বাচন করেন। এ নিয়ে আবুল হোসেন ও আতিয়ারের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ওই বিরোধের জের আজ সকাল ৯টার দিকে শুরু হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সকাল ৯টার দিকে দেশি অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের সমর্থকেরা হামলা করেন।
সংঘর্ষের সময় বন্দেখালী গ্রামের তাইজুল ইসলাম, হাসেম মাস্টার, আলামিন হোসেন, মিরাজ, মালেক মণ্ডল, শাহাদত হোসেন, কনক হোসেন, জাহিদ হোসেন, রিজিয়া খাতুন, শফিকুল ইসলাম, আতিয়ার রহমান, মতিয়ার রহমান, মজিবর রহমান, ইদ্রিস আলী, রুপচাদ, শরিফুল ইসলাম, হামিদুল, স্বপন, রিপন, আলম, আহম্মেদ, আলম হোসেন, জিয়ারুল, আবদুল রাজ্জাক, আবদুর রশিদ ও পচা মণ্ডলের বাড়িসহ ৪০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আকমল, জলিল, পঁচা মণ্ডল, আবেদ, আকুলসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে বিজয়ী প্রার্থী মোস্তফা আরিফ রেজা প্রথম আলোকে বলেন, বন্দেখালী গ্রামের ইউপি চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমানের ইন্ধনে পরাজিত প্রার্থী শামীম হোসেনের সমর্থকেরা হিংসার বশবর্তী হয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা করেছেন। এ সময় ৪০টির বেশি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
পরাজিত প্রার্থী শামীম হোসেন মোল্যা অভিযোগ করেন যে ভোটের ফলাফলের পর থেকে তাঁর শত শত সমর্থক বাড়িঘরে যেতে পারছেন না। এমন অবস্থায় কীভাবে তাঁরা হামলা করবেন? এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ। আরিফ রেজার সমর্থকেরা হামলা চালিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, সকালে বন্দেখালী গ্রামে জয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।