মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় এক দিনমজুরের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে দুটি ঘরসহ মালামাল ও নগদ অর্থ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া আগুনে তাঁর তিনটি গরু ও দুটি ছাগল মারা গেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে কাফাটিয়া ধল্লা গ্রামে হযরত আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী দিনমজুর হযরত আলী ঢাকার ধামরাই উপজেলার কালামপুর এলাকায় একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করেন। আগুনে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় সূত্র ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সূত্রে জানা যায়, একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করায় ধামরাইয়ের কালামপুর এলাকায় থাকেন কাফাটিয়া ধল্লা গ্রামের হযরত আলী। তাঁর পাঁচ মেয়ের চারজনের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী সালমা বেগম গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বাড়িতে দুটি চৌচালা টিনের ঘর পাশাপাশি। একটি ঘরে হযরতের স্ত্রী, মা ও ছোট মেয়ে থাকেন এবং অন্যটিতে গরু ও ছাগল রাখতেন। গতকাল বহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে গোয়ালঘরে আগুন জ্বলতে দেখে বাড়ির লোকজনের ঘুম ভাঙে। এরপর প্রতিবেশীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।
খবর পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট। প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এরই মধ্যে দুটি ঘরসহ মালামাল ও নগদ অর্থ পুড়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে তিনটি গরু ও দুটি ছাগল পুড়ে মারা যায়। হযরত আলী বলেন, আগুনে দুটি গাভি, একটি বাছুর ও দুটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে। দুটি ঘরসহ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রবাসী মেয়ের জামাইয়ের ৬২ হাজার টাকা ঘরে ছিল, তা–ও পুড়ে গেছে।
স্থানীয় পুটাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মহিদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে তিনি ওই বাড়িতে যান। অগ্নিকাণ্ডে গৃহকর্তা হযরত আলী সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। পরনের কাপড়ও নেই। আজ শুক্রবার সকালে তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে স্থানীয় বাজার থেকে জামাকাপড় কিনে দিয়েছেন এবং ৫০ কেজি চাল সহায়তা দিয়েছেন।
বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছেন মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে ভুক্তভোগী পরিবারের ৯ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিরূপণ করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতিশ্বর পাল। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে দুই বান (১৪টি) টিন ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।