নেত্রকোনার পূর্বধলায় সড়কে মায়ের রক্তাক্ত লাশের পাশে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া দুই বছর বয়সী শিশুটি এখনো পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেনি। ঘটনার চার দিন পরও শিশু ও তার মায়ের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির দেখাশোনা করছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যসহ দুই ব্যক্তি।
এদিকে হামলায় নিহত ওই নারীর পরিচয় এখনো শনাক্তসহ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। আঙুলের ছাপ মিলিয়ে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার মামলা হয়েছে।
বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সেখানে শিশুটির দেখাশোনা করছেন একই উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুস্তম আলী ও একই এলাকার সুজাত মিয়া।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার কাছিয়াকান্দা গ্রামের এক ব্যক্তি ফজরের নামাজের পর তাঁর মায়ের কবর জিয়ারত করতে যান। এ সময় তিনি ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী ওই নারীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। দুই বছর বয়সী শিশু অচেতন অবস্থায় মায়ের পাশে মাটিতে পড়ে ছিল। পরে স্থানীয় ব্যক্তিদের দেওয়া খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় আহত শিশুটিকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
বর্তমানে শিশুটি হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সেখানে শিশুটির দেখাশোনা করছেন একই উপজেলার বিশকাকুনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুস্তম আলী ও একই এলাকার সুজাত মিয়া।
শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। মাথা সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। তবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঘটনা ঘটেনি। সে জন্য তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম
এ বিষয়ে রুস্তম আলী বলেন, ‘শিশুটিকে নিয়ে আমরা বিপদে আছি। এখনো তার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের ধারণা, দুর্বৃত্তরা ওই নারীকে হত্যার পর শিশুটিকেও মেরে ফেলতে চেয়েছিল। শিশুটি গত বৃহস্পতিবার থেকে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ জেগে উঠে কেঁদে ফেলে, আবার ঘুমিয়ে যায়। এভাবে শিশুটিকে ফেলে রেখে বাড়ি যেতেও মন চাচ্ছে না।’
শিশুটির বর্তমান অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। মাথা সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। তবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঘটনা ঘটেনি। সে জন্য তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর চিকিৎসাপরবর্তী বিষয়ে সমাজসেবা দপ্তর ব্যবস্থা নেবে।’
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে জানান, জীবিত শিশু ও অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার পূর্বধলা থানার উপপরিদর্শক (এসাই) তারিকুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত আছে।