এক যুগ আগে একদিন কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মানসিক ভারসাম্যহীন যতীন্দ্রনাথ ওরফে যতীন (৮০)। এরপর আর তিনি বাড়ি ফেরেননি। এই ১২ বছরে যতীন্দ্রনাথকে অনেক খুঁজেছেন স্বজনেরা।
সম্প্রতি তাঁর মেয়ে ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা এক্কা জানতে পারেন, ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের রায়নগর গ্রামের একটি মন্দিরে আছেন যতীন্দ্রনাথ। এরপর তাঁকে ফিরিয়ে আনতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহযোগিতা চাওয়া হয়।
অবশেষে বিজিবির সহায়তায় বাবাকে ফিরে পেয়েছেন সাবিনা এক্কা। আজ মঙ্গলবার বিজিবির পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যতীন্দ্রনাথ উপজেলার আগ্রাদ্বিগুণ গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল সোমবার মধ্যরাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রতিনিধিদল তাঁকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। পরে মেয়ে সাবিনা এক্কার কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।
বিজিবির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, তাঁর বাবা যতীন্দ্রনাথ ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের কাছে সীমান্তবর্তী রায়নগর গ্রামের একটি মন্দিরে আছেন বলে জানান সাবিনা এক্কা। একই সঙ্গে তিনি বাবাকে ফিরে পেতে বিজিবির পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সহযোগিতা চান। এরপর ১৪ বিজিবির (পত্নীতলা ব্যাটালিয়ন) অধিনায়ক লে. কর্নেল হামিদ উদ্দিন ভারতের ১৬৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্টের কাছে যতীন্দ্রনাথকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সহযোগিতা কামনা করেন।
একপর্যায়ে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সীমান্ত পিলার ২৬০-৭-এস এলাকা দিয়ে ডাংগী বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ১৪ বিজিবির বস্তাবর বিওপির (সীমান্ত চৌকি) সদস্যদের মাধ্যমে যতীন্দ্রনাথকে বুঝিয়ে দেন। বর্তমানে তিনি নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা সদরে তাঁর মেয়ে সাবিনা এক্কার বাসায় অবস্থান করছেন।
যতীনের মেয়ে সাবিনা এক্কা বলেন, ‘২০১০ সালের দিকে বাবার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। হঠাৎ একদিন কাউকে কিছু না বলে নিরুদ্দেশ হয়ে যান বাবা। তখন মা বেঁচে ছিলেন। ধরেই নিয়েছিলাম বাবা বেঁচে নেই। ১০-১২ দিন আগে আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি ভারতে তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরেন। তিনি আমাকে জানান, বাবাকে ভারতের বালুরঘাট এলাকার একটা মন্দিরে দেখেছেন। বাবার ছবিও তুলে আনেন তিনি।’
সাবিনা এক্কা আরও বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় বিজিবির সহায়তায় অবশেষে বাবাকে ফিরে পেয়েছি। কতটা খুশি হয়েছি, তা বলে বোঝাতে পারব না। মা বেঁচে থাকলে অনেক খুশি হতেন।’