চট্টগ্রামে ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার অ্যাপোলো-ইমপেরিয়াল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠানটি এই হাসপাতালের অধীন। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ভুক্তভোগী ডলি আক্তার চিঠি দিলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ডলি আক্তারের অভিযোগ, পরপর দুই বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠানে উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন তিনি। ২০২৩ সালে পরিচালনা পর্ষদ তাঁকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদোন্নতি দেয়। গত বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি পেয়েছিলেন।
চিঠিতে ডলি আক্তার উল্লেখ করেন, পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষ জানার পর থেকে নানাভাবে হেনস্তা করতে থাকে। পদত্যাগ না করায় ৯ অক্টোবর সকালে মানবসম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলতে থাকেন, ‘আপনি গত বছরও চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন এবং এই বছরও আবার ছুটি নেবেন, আপনি পদত্যাগপত্র দিয়ে বিদায় নিন।’
ডলি আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমার কোনো অনুরোধ না শুনে ওই দিন দিবাগত রাত ১২টার দিকে আমার আট মাস বয়সী বাচ্চাসহ কলেজ হোস্টেল থেকে বের করে নগরের একটি হোটেলে রেখে আসে। চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি চিঠি দিয়েছি। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
তবে অধ্যক্ষ ডলি আক্তারকে চাকরিচ্যুত করার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি নোটিশে। ইমপেরিয়াল হাসপাতালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আরিফুর রহমানের সই করা ওই নোটিশে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে অধ্যক্ষ ডলি আক্তারকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ইমপেরিয়াল হাসপাতালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আরিফুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘উনি বিষয়গুলো ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছেন। ওনার চুক্তির মেয়াদ এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে শেষ হয়েছে। আর এত বছরে উনি তেমন কোনো উন্নয়ন করেননি।’ চাকরিচ্যুতির নোটিশে কারণ উল্লেখ না থাকার বিষয়ে জানান, ‘আইন অনুযায়ী টার্মিনেট (চাকরিচ্যুত) করতে কারণ উল্লেখ করতে হয় না।’
চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ওমর ফারুক ইউসুফ। জানতে চাইলে উপাচার্যের বরাত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) মো. আলাউদ্দিন স্বপন প্রথম আলোকে বলেন, চিঠির বিষয়ে উপাচার্য অবগত আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।