জামালপুরের মেলান্দহে অবস্থিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে জামালপুর শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মো. আরিফ (২৫), মো. মাসুদ (৩১) ও মো. লিটন (৩৫)। তাঁদের সবার বাড়ি জামালপুর পৌর শহরের বনপাড়া এলাকায়। আজ রোববার তাঁদের আদালতে পাঠানোর কথা।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জামালপুর পৌর শহরের বনপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকেন। তাঁদের মধ্যে গত শুক্রবার রাতে চারজন শিক্ষার্থী চা পান করতে বের হন। এ সময় স্থানীয় কিছু যুবক তাঁদের পথরোধ করে বাড়ি কোথায়সহ নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ওই মেসের সামনে চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েন। সেখানে গিয়ে ওই যুবকেরা শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ শুরু করেন এবং এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মারেন। পরে শিক্ষার্থীরা চায়ের দোকান থেকে বেরিয়ে আরও কিছু শিক্ষার্থীসহ বনপাড়া পৌর কবরস্থানের সামনে যান। ওই যুবকেরাও সংঘবদ্ধ হয়ে ছুরি, ধারালো কাঁচি, রডসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। অন্য শিক্ষার্থীরা তাঁদের উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল কাদের, আবদুল্লাহ আল নোমান, দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মনির আহাম্মেদ, এ এইচ রিয়াদ, গুলজার-ই-মোস্তফা, ফাইজুর রহমান, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইউনুছ আলী ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগ গায়েন। তাঁদের মধ্যে ইউনুছ, কাদের ও ফাইজুর জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আবদুল্লাহ ও মনিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) এস এম ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর। এ ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় নয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করে মামলা করেছেন। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। বর্তমানে ময়মনসিংহে দুজন এবং জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চারজন শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন। হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে।
এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে। অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের কয়েকটি দল মাঠে কাজ করছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।