মানিকগঞ্জে রান্নাঘরে ঝুলছিল যুবকের লাশ, মৃত্যু নিয়ে রহস্য

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় আজহার উদ্দিন নামের এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। বুধবার দুপুরে খানপাড়া গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় রান্নাঘর থেকে আজহার উদ্দিন (৩৫) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে গড়পাড়া ইউনিয়নের খানপাড়া গ্রাম থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যা করে ওই যুবকের লাশ রান্নাঘরে ঝুলিয়ে রাখা হতে পারে বলে প্রতিবেশী ও স্বজনদের ধারণা।

বিষয়টি নিয়ে রহস্য দেখা দেওয়ায় ওই যুবকের স্বজনেরা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) জানিয়েছেন। মৃত আজহার খানপাড়া গ্রামের মৃত আহম্মদ উল্লাহর ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে আজহার ছিলেন ছোট। তাঁর বড় দুই ভাই জহিরুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম সৌদিপ্রবাসী। প্রায় সাত বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে আজহারের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকে আট বছরের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যান।

সদর থানার পুলিশ, নিহতের স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ সকাল ১০টার দিকে বাড়িতে রান্নাঘরে আড়ার সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস নেওয়া অবস্থায় আজহারের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান প্রতিবেশীরা। এরপর স্বজনেরা রশি কেটে লাশ নামিয়ে পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর বেলা দুইটার দিকে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর তাঁর লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

আজহার দিঘী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মোল্লার চাচাতো ভাই। মতিন মোল্লা বলেন, ফাঁস নেওয়া রান্নাঘরের আড়া এবং মেঝের উচ্চতা দেখে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। এ কারণে তিনি এ বিষয়টি পিবিআইকে জানিয়েছেন। আজহারুল বেশ জমিজমার মালিক ছিলেন। বিবাহবিচ্ছেদের সময় বেশ কিছু জমি তিনি স্ত্রীকে লিখে দেন। সম্প্রতি চাচাতো ভাই মজিদ মোল্লা কৌশলে আজহারুলের কিছু জমি লিখে নেন। দুই দিন আগে বিষয়টি নিয়ে স্বজন ও প্রতিবেশীদের বেশ আলোচনা হয়।

মজিদ মোল্লা বলেন, ‘মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গেলে এলাকার কেউ কেউ আমাকে কটূক্তি করেন। তাঁদের কেউ বলেন, আমি জমি নেওয়ার কারণে আজহার আত্মহত্যা করেছে। এক বছর আগে আজহারের কাছ থেকে আমি ছয় লাখ টাকায় ২০ শতক জমি কিনে নিই। অন্য কোনো কারণে আজহার আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।’
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোক্তার হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে লাশ বাড়ির উঠানে দেখতে পান। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অপমৃত্যুর মামলার প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যা, নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।