গফরগাঁওয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজের বাড়িতে শনিবার ভোররাতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা
গফরগাঁওয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজের বাড়িতে শনিবার ভোররাতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা

গফরগাঁওয়ে সাবেক এমপি ফাহমী গোলন্দাজের গ্রামের বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজের (বাবেল) গ্রামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।

আজ শনিবার ভোররাতে উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের বাগুয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

ফাহমী গোলন্দাজের এই বাড়িকে ‘টর্চার সেল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন স্থানীয় লোকজন। বিগত সময়ে এই বাড়িতে নির্যাতনের শিকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে এই হামলা চালিয়েছেন বলে ধারণা তাঁদের।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, আজ ভোররাত চারটার দিকে এক দল লোক ফাহমী গোলন্দাজের বাড়ির দুটি ফটক ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা বাড়ির ভবনগুলোতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় একটি টিনশেডের ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় দুটি গাড়ি। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেখানে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি দেখে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। হামলায় অংশ নিতে আসা দুর্বৃত্তদের দলটি সাতটি মোটরসাইকেল ফেলে পালায়। পুলিশ মোটরসাইকেলগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুজ্জামান খান বলেন, ‘ভোররাত চারটার দিকে শতাধিক মানুষ সাবেক সংসদ সদস্যের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে আমরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, যারা হামলায় অংশ নিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান হন ফাহমী গোলন্দাজ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন তিনি। এরপর ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনেও পুনরায় সংসদ সদস্য সদস্য হন। ফাহমী গোলন্দাজ বাগুয়ার গ্রামের বাড়িটিকে ‘টর্চার সেল’–এ রূপ দেন সংসদ সদস্য হওয়ার পরই।

স্থানীয় একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ফাহমী গোলন্দাজের এই বাড়িতে বিএনপি-আওয়ামী লীগের যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলতেন, তাঁদের নির্যাতন চালানো হতো। গফরগাঁওকে তিনি ত্রাসের রাজত্বে পরিণত করেছিলেন। বিগত সময়ে নির্যাতিত মানুষই এই বাড়িতে হামলা করে থাকতে পারে বলে তাঁর ধারণা।

গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন ফাহমী গোলন্দাজ। ৫ আগস্ট থেকে গফরগাঁও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হলেও তাঁর বাড়ি ছিল অক্ষত। আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে ফাহমী গোলন্দাজের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।