বান্দরবানের থানচি উপজেলার একটি পাহাড়ি ছড়া
বান্দরবানের থানচি উপজেলার একটি পাহাড়ি ছড়া

বান্দরবানের থানচির আংশিক এলাকায় পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

বান্দরবানের থানচি উপজেলার আংশিক এলাকা আজ রোববার থেকে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর থানচিতে আবারও পর্যটকদের যাওয়ার অনুমতি মিলেছে। গতকাল শনিবার থানচি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পর্যটনসংক্রান্ত  এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন। গত ৩ এপ্রিল ব্যাংক ডাকাতির পর থেকে থানচিতে পর্যটক ভ্রমণে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় ট্যুর গাইড, যানবাহন মালিক-শ্রমিক, হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি, পর্যটনসংশ্লিষ্ট অংশীজনেরা সবাই উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন।

সভায় উপস্থিত থানচি প্রেসক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াচিং মারমা জানিয়েছেন,  থানচিতে সব জায়গায় না হলেও নিরাপদ কিছু স্থানে পর্যটন খুলে দেওয়ার ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন। উপস্থিত সবাই বলেছেন, পর্যটনে অচলাবস্থায় হোটেল-মোটেল ব্যবসা, শতাধিক ট্যুর গাইড, কমিউনিটি পর্যটন–সংশ্লিষ্ট পরিবার এবং প্রায় ২৫০টি গাড়ি ও নৌকার চালকসহ সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মানুষের আয় কমে গেছে।

ট্যুর গাইডরা বলেছেন, পর্যটন ভ্রমণে লিখিত কোনো আদেশ নেই। কিন্তু ২ এপ্রিল রুমার পরদিন দুপুরে ৩ এপ্রিল থানচিত ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তখন থেকে একদিকে আতঙ্কে পর্যটকেরা ভ্রমণ বন্ধ করে দেন। অপর দিকে নিরাপত্তার দিক বিবেচনায়  প্রশাসনও পর্যটকদের আগমনে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে শুরু করেন। এর ফলে প্রায় তিন মাস ধরে পর্যটক ভ্রমণে অলিখিত নিষেধাজ্ঞায় ট্যুর গাইডসহ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো সবচেয়ে সংকটে পড়েছে।

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেছেন, উপজেলার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পর্যটকদের আপাতত উপজেলা শহরতলির তুমাতুঙ্গী, সাঙ্গু নদের উজানে তিন্দু, রেমাক্রি ও ডিমপাহাড় ভ্রমণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ভ্রমণে যাওয়ার আগে অবশ্যই প্রশাসনকে অবহিত করে এলাকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল স্থানীয় ট্যুর গাইড নিতে হবে। প্রশাসনের নির্দেশিত স্থানের বাইরে ভ্রমণ করা যাবে না।

বান্দরবানের নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তৎপরতার কারণে ২০২২ সালে অক্টোবর থেকে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে দফায় দফায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গত বছরের শেষের দিকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছিল।  কিন্তু কেএনএফ ২ ও ৩ এপ্রিল থানচি ও রুমায় ব্যাংক ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অস্ত্র লুট করে। ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেএনএফের বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করছে। ব্যাংক ডাকাতির পর থেকে তিন উপজেলায় অঘোষিতভাবে পর্যটক ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। থানচিতে আজ রোববার থেকে আংশিক খুলে দেওয়া হলেও রুমা ও রোয়াংছড়িতে এখনো বিধিনিষেধ রয়েছে।