রাজশাহী-১ আসনের নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর পথসভায় উপস্থিত হয়ে নৌকায় ভোট চেয়েছেন বিএনপির এক নেতা। মঙ্গলবার বিকেলে তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের শিধাইড় ক্লাব মোড়ে তিনি এই ভোট চান।
বিএনপির এই নেতার নাম মোজাম্মেল হক খান। তিনি তানোর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এ ছাড়া তিনি সরনজাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান।
এই অনুষ্ঠানে ওমর ফারুক চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলামসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ওই সভায় মোজ্জামেল হক বলেন, ‘আমার একটা মেসেজ, যেহেতু আমাদের বিএনপি থেকে প্রার্থী নাই। বিএনপি নির্বাচন করছে না। অতএব বিএনপি যেহেতু নির্বাচন করছে না, বিএনপির লোকেরা ভোট না দিলেও কিন্তু ৭ তারিখে একজন এমপি নির্বাচিত হবেন। আল্লাহ যার ভাগ্যে লিখে রেখেছেন। আমরা চাইব, আমাদের তানোর-গোদাগাড়ীর উন্নয়ন হোক। এখন আমি যদি অন্য আমের গাছ লাগাই আর ফজলি আমের প্রত্যাশা করি, তাহলে কি হবে। কখনোই হবে না। অতএব উনি (বর্তমান সংসদ সদস্য) একজন আমাদের পরীক্ষিত মানুষ। এই মানুষ থুইয়ে হঠাৎ নতুন লোক আইসবে, এটা শিখতে শিখতেই কিন্তু পাঁচ বছর চলে যাবে। কথা ঠিক না বেঠিক বলেছি বলেন। অতএব আমরা ভুল করব না।’
বিএনপির সমর্থকদের উদ্দেশে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আর যাঁরা বিএনপি করেন, সমর্থিত ব্যক্তি আছেন। তাঁদের কাছে আমার মেসেজ, আমরা ভোটকেন্দ্রে যাব, ভোট দেব আমাদের তানোরের মানুষ, অহংকার, গর্ব ওমর ফারুক চৌধুরীকে।’
মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘শুনেন, আপনারা আমাদের চেয়ারম্যান বানিয়েছেন এলাকার কাজ করার জন্য, এখন এমপি মহোদয় আবারও যদি এমপি হন, উনার কাছ থেকে যে সমস্ত কাজ আমরা পাব, অন্য কারও কাছে এই কাজ আমরা আশা করতে পারি না। আমরা এখন দায়িত্বে আছি, আমরা জানি। কার দ্বারা কী সম্ভব। অতএব আমি আপনাদের কাছে বিনীত অনুরোধ করব যে উনি পরীক্ষিত লোক। উনার যে অভিজ্ঞতার দাম, এই দামটাকে সহযোগিতা করতে হবে। যাতে উনার অভিজ্ঞতা তানোর-গোদাগাড়ীর মানুষের কাজে লাগে।’
এর আগে গত ১৯ অক্টোবর রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর দেওয়া ফুলের মালা পরে বিপাকে পড়েন মোজাম্মেল খান। এ ঘটনায় খবর রটে, তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। ওই সময় তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তিনি ছাত্রদল করেছেন, যুবদল করেছেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। এখন আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। তিনি কমিটির অন্যতম সদস্য। তিনি কেন আওয়ামী লীগে যোগ দেবেন? সংসদ সদস্য তাঁকে স্নেহ করেন বলে মালাটি দিয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেননি।
ওই ঘটনার কয়েক মাস পর নির্বাচনের ঠিক আগে ওমর ফারুক চৌধুরীর সভায় এসে ভোট চাইলেন তিনি। সেই সঙ্গে বিএনপির সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ারও আহ্বান জানালেন।
এ বিষয়ে জানতে সন্ধ্যা থেকে একাধিকবার ফোন করা হলেও মোজ্জামেল হক ধরেননি।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোস্তফা মামুন প্রথম আলোকে বলেন, মোজাম্মেল হক তানোর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন। এখন আর তিনি বিএনপির কোনো পদে নেই। বক্তব্য দিয়ে থাকলে এটা তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য। তিনি ওই সভায় বিএনপির কথা বলতে পারেন না। এ বিষয়ে কেন্দ্রে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গোলাম মোস্তফা মামুন আরও বলেন, এর আগে এক সভায় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর দেওয়া ফুলের মালা গলায় পরেছিলেন মোজাম্মেল খান। বিএনপি তখনই তাঁকে শোকজ করেছিল।