খুনের নাটক সাজানো মো. নাহিদ ইসলাম ওরফে তাজুল ইসলামের (২৮) বিরুদ্ধে সিলেটের বিয়ানীবাজার থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে তথ্য গোপন করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি এবং টাকা নিয়ে পরিশোধ না করে মিথ্যা খুনের নাটক সাজানো ও প্রতারণার অভিযোগে সেলিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি অপর মামলাটি করেন।
সোমবার দুপুরে নাহিদ ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার রাতে মামলা দুটি করা হয়। নাহিদ ইসলাম বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের পূর্বপার গ্রামের মো. আবদুল হেকিমের (৬৮) বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার ভোরে তাঁর ঘরের বিছানা, মেঝে ও বারান্দায় রক্তজাতীয় তরল পাওয়া গিয়েছিল। এর পর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, নাহিদ খুন হয়েছেন। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, ঘরের ভেতরে পড়ে থাকা রক্তজাতীয় তরল ও নাহিদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি সাজানো। পরদিন শনিবার সন্ধ্যায় নরসিংদী থেকে নাহিদকে আটকও করে পুলিশ।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, জুয়া খেলে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ঋণের টাকার পরিশোধ এড়াতে খুন হওয়ার নাটক সাজিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা পূর্বপাড়া গ্রামে।
প্রায় ১৪ বছর আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ানীবাজারে এসেছিলেন নাহিদ। এরপর আর কখনো বাড়িতে যাননি। এর মধ্যে বিয়ানীবাজার আসার পর জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম পাল্টে রাখেন ‘নাহিদ ইসলাম’। জাতীয় পরিচয়পত্রে স্থায়ী ঠিকানাও বদলে ফেলেন তিনি। তবে মা–বাবার নাম অপরিবর্তিত রেখেছিলেন।
সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্মা মো. তাজুল ইসলাম বলেন, নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে বিয়ানীবাজারের সেলিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও মিথ্যা খুনের নাটক সাজানোর অভিযোগে মামলা করেন। এতে তাঁকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করার অভিযোগে বিয়ানীবাজার থানার উপপরিদর্শক প্রলয় রায় বাদী হয়ে অপর মামলাটি করেন। এ মামলায় নাহিদ ইসলাম ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি রাখা হয়েছে।