যানবাহন উঠলেই কেঁপে ওঠে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় নরসুন্দা নদীর ওপর ঝুঁকিপূর্ণ মোহরকোনা-দামপাড়া সংযোগ কামালপুর সেতু
  ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় নরসুন্দা নদীর ওপর নির্মিত কামালপুর সেতুর বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। ভেঙে পড়েছে দুই পাশের রেলিং। কোথাও কোথাও পিলারের আস্তর খসে ভেতরের রড পর্যন্ত বের হয়ে এসেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। কিন্তু বিকল্প না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা ঝুঁকি নিয়েই সেতুটি ব্যবহার করছে।

কামালপুর সেতুটি নিকলী উপজেলার মোহরকোনা ও দামপাড়া এলাকাকে সংযুক্ত করেছে। নিকলী সদর, দামপাড়া ও সিংপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেকোনো যানবাহন উঠলেই কেঁপে ওঠে সেতুটি। ওপর দিয়ে যেকোনো ছোট গাড়ি গেলেও হেঁটে যাওয়া মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সেতুটি সরু আর উঁচু হওয়ায় একসঙ্গে দুটি অটোরিকশা যাতায়াত করতে পারে না। সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে ফলকে বড় করে লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘মালবাহী ট্রাক বা ট্রাক্টর চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ।’ কিন্তু এরপরও সেতু দিয়ে রিকশা, ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ট্রাক্টর চলাচল করে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা সাইদুর রহমান ও সাবেক ইউপি সদস্য কমর উদ্দিন বলেন, বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেও চলছে ভারী যানবাহন। এ সেতুটি নিকলী সদরের সঙ্গে দামপাড়া ও সিংপুর ইউনিয়নের যোগাযোগের মাধ্যম। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষ যাতায়াত করে, চলে কয়েক শ যানবাহন। কর্তৃপক্ষ বারবার মাটি পরীক্ষা করলেও সেতুর কাজ শুরু হচ্ছে না। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটি সরু (১.৯৫ মিটার) হওয়ায় একসঙ্গে দুটি অটোরিকশা যাতায়াত করতে পারে না। এ কারণে সেতুর ওপর এক হাতে লাল আর অন্য হাতে সবুজ কাপড় উড়িয়ে সংকেত দেন একজন। সংকেতের ওপর নির্ভর করেই এক পাশে সেতুতে অটোরিকশাসহ যানবাহন উঠলে অন্য পাশ বন্ধ থাকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শুধু রডের ওপর কোনোমতে সেতুর পিলারগুলো দাঁড়িয়ে আছে। এ অবস্থা দেখে কর্তৃপক্ষ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ লিখে একটি সাইনবোর্ড টানালেও ইট, রড, সিমেন্টের মতো ভারী মালামাল নিয়ে ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। সেতুটি এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে মানুষ হেঁটে গেলেও ভয় পায়। এভাবে ভারী মালামালবোঝাই যানবাহন চলাচল করলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

সেতুটি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ বলে নিশ্চিত করেছেন এলজিইডি কিশোরগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সেতুর পাশের ফলকে নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ডও দেওয়া হয়েছে। যেকোনো সময় সেতুতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে সেতুটির মাটি পরীক্ষার কাজ চলমান রয়েছে।