ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা। আজ বিকেলে
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা। আজ বিকেলে

রামুতে পানিতে ভেসে গিয়ে শিশুসহ দুজনের মৃত্যু, নিখোঁজ আরও দুজন

ভারী বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে কক্সবাজারের রামুতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অন্তত ২৩ হাজার মানুষ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বাঁকখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, তাতে নদীর দুই তীরের ৩০টির বেশি গ্রামের ১ হাজার ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে মারা গেছেন শিশুসহ দুজন। এখনো নিখোঁজ আরও দুজন।

বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারি–বেসরকারি তৎপরতা চোখে পড়েনি। নেই কোনো ত্রাণ তৎপরতা কিংবা খাদ্যসহায়তা। ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘরে ঘরে খাবার ও পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা পরিষদের নবনিযুক্ত প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ চারজনের মধ্যে বিকেল পাঁচটার দিকে এক শিশু ও একজন যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ অপর দুজনের সন্ধান চালানো হচ্ছে।

বাঁকখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের অন্তত ২৩ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে জানিয়ে ইউএনও রাশেদুল ইসলাম বলেন, বন্যাকবলিত লোকজনের মধ্যে দ্রুত খাদ্যসহায়তা ও শুকনা খাবার পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজন জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে বন্যার পানিতে ভেসে গেছেন রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দুজন। তাঁরা হলেন ইউনিয়নের পূর্ব জুমছড়ি গ্রামের ছৈয়দ হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন (২২) ও ছালেহ আহমদের ছেলে রবিউল আলম (৩৫)। বিকেল পাঁচটার দিকে আমজাদ হোসেনের মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানান ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কাসেম।

একই সময় রামুর ঈদগড় খালে ভেসে নিখোঁজ হয়েছেন স্থানীয় কৃষক সাচিং মারমা ও রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের লম্বরিপাড়ার বাসিন্দা নুরুল কবিরের ১০ বছর বয়সী এক মেয়েশিশু। বিকেল চারটার দিকে শিশুটির মরদেহ বাঁকখালীর নদীর তীরে পাওয়া গেলেও সাচিং মারমার হদিস মিলছে না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢলের পানিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে রামুর গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া ও কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে। বাঁকখালী নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে গর্জনিয়ার মাঝিরকাটা, পূর্ব বোমাংখিল গ্রাম ও ক্যাজরবিল জামে মসজিদ, প্রাচীন কবরস্থানসহ কয়েক শ ঘরবাড়ি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৩৫ মিলিমিটার। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। ভারী বর্ষণের প্রভাবে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটতে পারে।