দেশের বৃহত্তম সিটি করপোরেশন গাজীপুর। আগামী ২৫ মে এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে। তবে নির্বাচনের আগে আলোচনা হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে। দল ও নির্বাচনের নানা বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আপনি। আপনাদের নেতাদের মধ্যে বিভক্তির কথা শোনা যায়। কী ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন?
আজমত উল্লা খান: মহানগর আওয়ামী লীগে কোনো বিভেদ নেই। এটি একটি অপপ্রচার। দলের যেকোনো নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, মূল্যবোধের জায়গা থেকে তাঁর যে বক্তব্য ছিল, এর পরিপ্রেক্ষিতে দল বিধি মোতাবেক তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনো কোন্দলের কারণে এটা হয়নি। হয়েছে তাঁর অপকর্মের কারণে। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগে কি কোনো প্রতিক্রিয়া হয়েছে? কেউ প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। আমরা মহানগর আওয়ামী লীগসহ ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন করেছি। সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোথাও কোন্দলের কারণে সম্মেলন বন্ধ হয়নি। সুতরাং যারা রটাতে চায় কোন্দল রয়েছে, তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগে কোনো কোন্দল নেই। অতীতেও ছিল না।
আওয়ামী লীগ থেকে গাজীপুর সিটির প্রথম নির্বাচনে আপনি মেয়র পদে প্রার্থী ছিলেন। গতবার মনোনয়ন পাননি। এবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে কতটা আশাবাদী?
আজমত উল্লা খান: এটা যেহেতু দলীয় নির্বাচন এবং দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন হবে। এটা যদি রাজনৈতিক বিবেচনায় হয় তাহলে আওয়ামী লীগের তৃণমূল থেকে গড়ে ওঠা একজন নেতা হিসেবে আমি আশাবাদী। আমি তিনবারে ১৮ বছর টঙ্গী পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। অন্যদের বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে; দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তের জন্য দেওয়া হয়েছে। সুতরাং এই বিবেচনায়ও যদি ধরা হয়, আমার দায়িত্বকালে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি।
দলীয় মনোনয়ন যদি না পান, তবু নির্বাচনে অংশ নেবেন?
আজমত উল্লা খান: আমি তো নির্বাচন অবশ্যই করব। দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, আমি তাঁর জন্য নির্বাচন করব। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি সবাইকে নিয়ে করব, আর যদি দল কোনো কারণে কনসিডার না করে, সে ক্ষেত্রে যাঁকে দেবে, তাঁর জন্য কাজ করব। ২০১৮ সালে আমাকে মনোনয়ন দেয়নি, সেদিন কিন্তু আমিই প্রথম জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছি। সে কিন্তু আমার বাড়িতে যায়নি। আমি তার বাড়িতে গিয়ে বলেছিলাম, আমার কী দায়িত্ব বলো।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে, এতে নির্বাচন কতটা প্রতিযোগিতামূলক হবে?
আজমত উল্লা খান: এটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। এর আগে উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভাসহ বিভিন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটা নির্বাচন কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে। সেই নির্বাচনগুলোতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। হয়তো তারা নির্বাচনে প্রতীকটা নেয়নি, কিন্তু নির্বাচন তারা করেছে। তারা নির্বাচন না করলেও দলের ভালো ভালো নেতা-কর্মীরা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। তারা মেয়র পদে অংশগ্রহণ না করলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না, এটা কিন্তু বলা যাবে না। সুতরাং নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক হবে। এ ছাড়া কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জে প্রতীক না নিয়েও নির্বাচন করেছে তারা।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনার প্রত্যাশা কী?
আজমত উল্লা খান: আমি সব সময় সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করি। আমি তিনবার টঙ্গী পৌরসভার নির্বাচন করেছি, তখন আমার পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যতটুকু প্রক্রিয়া ছিল, আমি ততটুকু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। নির্বাচনের পরে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। আমি যখন সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম, তখন কোথাও আমার পক্ষ থেকে সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। বরং কিছু কিছু জায়গায় আমার এজেন্টদের মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশনও তৎপর রয়েছে।