টাঙ্গাইলের নাগরপুরে মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে দুজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে নিহত আবদুস ছাত্তারের ছেলে আরিফ হোসেন বাদী হয়ে নাগরপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে গণপিটুনিতে একজন নিহতের ঘটনায় আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ধুবরিয়া পূর্ব পাড়া গ্রামে মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে চাচা ও ভাতিজাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে হত্যাকাণ্ডের খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে হামলাকারীদের একজন নিহত হন। হামলায় নিহত দুজন হলেন ধুবরিয়া পূর্ব পাড়া গ্রামের মুকুল মিয়ার ছেলে আছাদুল ইসলাম ও তাঁর চাচা আবদুস ছাত্তার। অন্যদিকে গণপিটুনিতে মারা যাওয়া ব্যক্তি হলেন বাঁশি মিয়ার ছেলে তালেব মিয়া।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. শরফুদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় নিহত আবদুস ছাত্তারের ছেলে বাদী হয়ে আটজনের নামে হত্যা মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গণপিটুনিতে নিহত তালেবের পরিবারের কেউ মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধুবরিয়া পূর্ব পাড়া গ্রামের আছাদুল ইসলাম ও তালেব মিয়া দুজনে মাদক ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। তাঁরা নিজেরাও মাদক সেবন করতেন। ইয়াবার ব্যবসা নিয়ে তাঁদের দুজনের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয়। এ নিয়ে এলাকায় দুজনের দুটি পক্ষ তৈরি হয়। আগেও তাঁদের মধ্যে মাদক ব্যবসা নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে আছাদুলের চাচা আবদুস ছাত্তার বিভিন্ন সময় তাঁদের শাসিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাদক ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গতকাল রাত আটটার দিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আছাদুলের ওপর হামলা করেন তালেব ও তাঁর সহযোগীরা। তখন আছাদুলকে বাঁচাতে এগিয়ে যান তাঁর চাচা আবদুস ছাত্তার ও আজমল নামের একজন। তখন তাঁদেরও কুপিয়ে জখম করেন হামলাকারীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আছাদুল ও ছাত্তারকে মৃত ঘোষণা করে আজমলকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। হত্যাকাণ্ডের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত লোকজন তালেবকে গণপিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম জসীম উদ্দিন বলেন, নিহত চাচা-ভাতিজা ও তালেবের লাশ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।