রংপুরে সরকারি গুদামের চাল-গম আত্মসাৎ, খাদ্য পরিদর্শকসহ তিনজনের নামে মামলা

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

রংপুরে সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার চাল-গম বিক্রি ও আত্মসাতের অভিযোগে সদর উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন সদর উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, নিরাপত্তা প্রহরী চঞ্চল কুমার সিংহ এবং লেবার সরদার রবিউল ইসলাম। এ ঘটনায় কানিজ ফাতেমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম জানান, গতকাল রাতে মামলা হয়েছে। মামলার নথিপত্র দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আত্মসাৎ করা খাদ্যশস্যের মধ্যে চাল ১৪৪ দশমিক ৭৪৪ মেট্রিক টন ও গম ৩০৭ কেজি। এ ছাড়া ৯ হাজার ৫৪৪ খালি বস্তা লুট হয়েছে। এসব পণ্যের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪৭ হাজার ৮০৪ টাকা।

খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা খাদ্যগুদাম (এলএসডি) এলোমেলো থাকায় সবার মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এরপর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ অন্য কর্মকর্তারা সরেজমিন দেখে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহ্বায়ক তারাগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রইচ উদ্দিন ও সদস্যসচিব পীরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অমূল্য কুমার সরকার। টানা ১০ দিন তদন্ত করে ১১ সেপ্টেম্বর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্য থেকে জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা খাদ্যগুদামের (এলএসডি) খামাল গঠন ও মজুত ব্যবস্থাপনায় অসংগতি পাওয়া যায়। এ জন্য ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা ও অন্য কর্মচারীদের উপস্থিতিতে গুদামের শ্রমিকদের মাধ্যমে খামাল গণনা করা হয়। এতে মজুত খাদ্যশস্যের ঘাটতি দেখা যায়। গুদামের মজুত যাচাইকালে গুদাম–সংশ্লিষ্ট সবার অহযোগিতা ও দায়িত্বশীলতার যথেষ্ট অভাব ছিল।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অন্তরা মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে ১৪৪ দশমিক ৭৪৪ টন চাল, ৩০৭ কেজি গম ও ৯ হাজার ৫৪৪টি খালি বস্তা পাওয়া যায়নি। এগুলো সরিয়ে ফেলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। অভিযুক্ত সদর উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গতকাল শনিবার রাতে মামলা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কানিজ ফাতেমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।